কনস্টেবল বিজয় কুমার। ছবি: এএনআইয়ের টুইট সৌজন্যে।
বুলেট প্রুফ ভেস্ট ফুঁড়ে দিয়েছে গুলি। শরীরের ঠিক যে অংশটা তাক করে গুলি চলেছিল, তার নীচেই রয়েছে হত্পিণ্ড। আর একটু হলেই গুলি বিঁধে যাবে তাতে। শরীরে গুলিটা লাগার পরই ছিটকে মাটিতে পড়ে যান তিনি। কয়েক মুহূর্তের জন্য ভেবেই নিয়েছিলেন এইখানেই শেষ তাঁর জীবন। সহকর্মীরাও এ ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত হয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু অবাক হওয়ার তখনও বাকি ছিল। কারণ এর পরেই বুকে হাত চেপে সুস্থ শরীরে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েন উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদের পুলিশ কনস্টেবল বিজেন্দ্র কুমার। বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ভেদ করা গুলিটা আটকে গিয়েছে বুক পকেটে রাখা তাঁর ওয়ালেটে!
শনিবার ফিরোজাবাদে সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী যে বিক্ষোভ চলছিল, তা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়েই এমন ঘটনার সাক্ষী হতে হয়েছে ওই কনস্টেবলকে।
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে কনস্টেবল বলেছেন, “আমি ফিরোজাবাদের নলবান্দ এলাকায় কর্তব্যরত ছিলাম। সে সময় বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকে আমাদের দিকে গুলি ছোড়া শুরু হয়। একটি গুলি আমার বুলেটপ্রুফ ভেস্ট ছেদ করে জ্যাকেটের ওয়ালেটে আটকে যায়। তাতে চারটি এটিএম কার্ড, শিবজি এবং সাই বাবার ছবি ছিল। এটা আমার দ্বিতীয় জীবন পাওয়া মনে হল.” কী ভাবে গুলিটা তাঁর জ্যাকেট ভেদ করে ওয়ালেটে বিঁধেছে সে ছবিও টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে।
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে গত তিন-চার দিনের হিংসায় তেতে উঠেছে উত্তরপ্রদেশ। রাজ্যে মোট ১৬ জন মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে আট বছরের একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে। বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ এবং গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে। মৃতদের বেশিরভাগেরই দেহে গুলির চিহ্ন মিলেছে। তবে পুলিশ বারবারই গুলি চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি ও পি সিংহ বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকেই গুলি চলেছে। আইজি (আইন-শৃঙ্খলা) প্রবীণ কুমার জানান, সারা রাজ্যে বিক্ষোভের এলাকা থেকে ৪০৫টি কার্তুজের খোল মিলেছে। ২৬৩ জন আহত পুলিশের মধ্যে ৫৭ জনের শরীরে গুলির আঘাত রয়েছে। তবে রবিবার পুলিশের গুলি চালানোর একটি ভিডিয়ো সামনে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বন্ধুকের নল উঁচিয়ে বিক্ষোভকারীদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আর পিছন থেকে নির্দেশ আসছে, ‘মেরে ফেল সবক’টাকে।’