মায়ানমারের ছত্রভঙ্গ সেনা এখন ভারতমুখী। ছবি: রয়টার্স।
এ বার আর সেনার তাড়া খেয়ে শরণার্থীরা নন, জঙ্গিদের তাড়া খেয়ে একেবারে মায়ানমারের সেনাই প্রাণ বাঁচাতে ঢুকে পড়ল ভারতে!
মিজ়োরামের চাম্ফাই জেলার ও-পারে মায়ানমারের ফালাম টাউনশিপের রিখাওদার সেনা ঘাঁটি তথা উপনগরী দখল করে নিল মায়ানমারের চিন জনগোষ্ঠীর জঙ্গি সংগঠন চিন ন্যাশনাল আর্মি ও তাদের সঙ্গ দেওয়া পিপলস্ ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। সেনার সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে ওই চিন জনগোষ্ঠীরই প্রায় ৩৫ হাজার শরণার্থী এখন মিজ়োরামে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু চিন ন্যাশনাল আর্মি ও পিডিএফ রিখাওদার দখল করে সেখানে তাদের পতাকা উড়িয়ে দেওয়ার পরে তাড়া খেয়ে মায়ানমারের ছত্রভঙ্গ সেনা এখন ভারতমুখী। তেমনই ৩৯ জন সেনাকে গত রাতে সীমান্ত পার হওয়ার পরে হেফাজতে নিয়েছিল আসাম রাইফেলস। তাদের মধ্যে এক জন জখমও ছিলেন। আজ আরও কয়েক জন বর্মি জওয়ান মিজ়োরামে ঢোকেন।
আসাম রাইফেলস সূত্রে খবর, মায়ানমারের জখম সেনার চিকিৎসা চলছে চাম্ফাই হাসপাতালে। ৪২ জন সেনাকে আজ মায়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মিজ়োরাম থেকে তাঁদের দু’টি এমআই-১৭ হেলিকপ্টারে তুলে মণিপুর-মায়ানমার সীমান্তের মোরে শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বন্ধুত্ব সেতু পার করে তাঁদের নিজের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মোরের অপর পারে, ওই অংশ এখনও মায়ানমার সেনার হাতে রয়েছে। আশ্রয় নেওয়া বর্মি সেনারা জানিয়েছেন, চিন জঙ্গিরা ও তাদের সহযোগী বাহিনী বহু সেনা জওয়ানকে হত্যা করেছে। অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ দিকে মায়ানমারের সেনাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে জানতে পেরে সোমবার চিন শরণার্থীরা মিজ়োরামের জ়োখাওথার থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখায়। মায়ানমার সেনার আক্রমণে গত কয়েক দিনে প্রায় ২৫০০ চিন শরণার্থী জ়োখাওথার শহরে প্রবেশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে ২১ জন জখম ছিলেন। এক জন মারাও যান। তাই শরণার্থীরা মায়ানমার সেনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জখম শরণার্থীদের দেখভাল করছে ইয়ং মিজ়ো অ্যাসোসিয়েশন। তারা জখমদের জন্য ৪২ বোতল রক্তেরও ব্যবস্থা করেছে। ৮ জনকে সঙ্কটজনক অবস্থায় আইজ়লের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।