ছবি: পিটিআই।
‘শুভ মুহূর্ত’ দেখে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে তৈরি হয়েছিলেন বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা। কিন্তু ঘরে-বাইরে টানাপড়েনে আপাতত কুর্সির অদূরেই অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে তাঁকে। কর্নাটকের স্পিকার রমেশ কুমার বিদ্রোহী বিধায়কদের নিয়ে কী পদক্ষেপ করেন, সরকার গড়ার দাবি জানানোর আগে তা দেখে নিতে চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। স্পিকার আজ রাতেই দলত্যাগ বিরোধী আইনে ১৬ জনের মধ্যে তিন জন বিক্ষুব্ধ বিধায়কের বিধানসভার সদস্যপদ খারিজ করে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার কুমারস্বামী সরকারের পতনের পরে, জ্যোতিষীর পরামর্শে শপথের জন্য ‘শুভ মুহূর্ত’ দেখে ফেলেছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। বিজেপি সূত্রের দাবি, জ্যোতিষী জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার ৩ টে ২৮ মিনিট থেকে ৩ টে ৪৮ মিনিট পর্যন্ত আর শুক্রবার বিকেল ৪ টে শপথের জন্য শুভ ক্ষণ। কিন্তু আজকের ‘শুভ’ সময় তো পেরিয়েই গিয়েছে, আগামিকালের ‘শুভ’ মুহূর্তও অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে কর্নাটক বিজেপির শীর্ষ নেতার জন্য।
কারণ কী?
বিজেপি সূত্রের খবর, কর্নাটকে কংগ্রেস ও জেডিএসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের ইস্তফা কিংবা তাঁদের সদস্যপদ খারিজ নিয়ে স্পিকার কী সিদ্ধান্ত নেন, বিজেপি তা বুঝতে চাইছে। স্পিকার যদি সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখেন কিংবা বিদ্রোহীদের সদস্যপদ খারিজ করেন, তা হলে আলাদা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। সরকার গঠনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অঙ্ক এ উপরেই নির্ভর করবে। রাতেই স্পিকার কংগ্রেসের আর শঙ্কর এবং আরও দুই বিদ্রোহী বিধায়ক রমেশ জারকিহোলি ও মহেশ কুমথালির সদস্যপদ খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁরা বিধানসভার সদস্য রইলেন না। বিধানসভা ভঙ্গ না হওয়া পর্যন্ত ভোটেও লড়তে পারবেন না। এই বিধায়কদের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেননি স্পিকার।
এর সঙ্গেই জুড়ে গিয়েছে বিকল্প সরকার গড়ার অঙ্ক। কর্নাটকে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ২২৫ আসন বিশিষ্ট (এক জন মনোনীত সদস্য) বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ১০৫। তিন জনের সদস্যপদ খারিজের ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ১১১ জনের সমর্থন। নির্দল ও অন্য ছোট দলের সমর্থনে বিজেপি সরকার গড়লেও পরবর্তী সময়ে বিদ্রোহী বিধায়কদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এঁরা কুমারস্বামীকে সরালেও এঁদের অধিকাংশ কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়ার ঘনিষ্ঠ। ফলে বিদ্রোহী বিধায়কদের ইস্তফা অথবা সদস্যপদ খারিজ নিয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। এই বিধায়কদের সঙ্গে কংগ্রেসের ফের যোগাযোগের সম্ভাবনাও খারিজ করতে পারছে না বিজেপি। এ ছাড়া, কর্নাটক মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন।
এই টানাপড়েনের মধ্যেই কর্নাটকে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সম্ভাবনাও সামনে আসছে। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সে রাজ্যে অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ পাশ করাতে হবে। এই সময়ের মধ্যে নতুন সরকার গড়া না গেলে জারি করতে হবে রাষ্ট্রপতি শাসন। স্পিকার আজ বলেন, ‘‘অর্থবিল যাতে পাশ হয়, তা সব দলের দেখা উচিত। তাঁরা আমার সহযোগিতা চাইলে করব।’’ তবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই তিনি বিধায়কদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন, এমন ইঙ্গিত দেননি স্পিকার। বলেছেন, ‘‘যখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা মনে হবে, তখনই নেব। মাত্র দু’দিন দেরির জন্য এমন ভাবে বলা হচ্ছে, যেন দু’বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে!’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।