কে কবিতা। —ফাইল চিত্র।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন বিআরএস নেত্রী কে কবিতা। ইডি হেফাজতের মেয়াদ ফুরোলেও স্বস্তি মিলল না তাঁর। মঙ্গলবার তাঁকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট। আদালতে জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন তেলঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কন্যা কবিতা। বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক কাবেরী বাজওয়া জানিয়েছেন, আগামী ১ এপ্রিল কবিতার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদনটি শুনবেন তিনি। মঙ্গলবার আদালত কবিতাকে ১৪ দিন বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৯ এপ্রিল। অর্থাৎ, তত দিন পর্যন্ত জেলই ঠিকানা হতে চলেছে চন্দ্রশেখর-কন্যার।
কবিতাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানিয়েছিল ইডি। সে দিক থেকে দেখলে ইডির আর্জিকে মান্যতা দিল নিম্ন আদালত।
মঙ্গলবার কবিতার আইনজীবী নীতেশ রাণা আদালতে জানান, কবিতার ছোট ছেলের পরীক্ষা। তাই তাঁকে অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দেওয়া হোক। ইডির কৌঁসুলি অবশ্য জামিনের বিরোধিতা করে জানান যে, তাঁদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ দেওয়া হোক। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি আদালতে আরও জানায়, যে অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এ কবিতা গ্রেফতার হয়েছেন, সেখানে জামিন পেতে গেলে কিছু কঠোর নিয়ম মানতে হয়। বিচারক ইডির কৌঁসুলিকে নির্দেশ দেন যে, তাঁরা যেন কবিতাকে জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা সংক্রান্ত নতুন আবেদন না করেন।
এর আগে গত শনিবার কবিতাকে আরও তিন দিন ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। ওই দিন ইডি হেফাজত শেষে কবিতাকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সেই শুনানিতেই জামিনের আবেদন করেছিলেন চন্দ্রশেখরের কন্যা। তবে আরও পাঁচ দিন কবিতাকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে পাল্টা আবেদন করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ১৫ মার্চ দুপুরে কবিতার হায়দরাবাদের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। চলে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ। তার পর বিকেলে বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। ইডির গ্রেফতারি ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেন কবিতা। ইডির গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চন্দ্রশেখরের কন্যা। যদিও শীর্ষ আদালত কবিতার আবেদনে সাড়া দেয়নি। নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করার পরামর্শ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বিশেষ বেঞ্চ শুনানির সময় জানায়, কবিতাকে অবশ্যই নীতি অনুসরণ করতে হবে। তাঁর জন্য কোনও নিয়ম ভাঙা যাবে না। শীর্ষ আদালতে এ ভাবে সরাসরি জামিনের আবেদন করা যায় না।
গত ডিসেম্বরে মণীশ সিসৌদিয়ার ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত অমিত আরোরা নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। সূত্রের খবর, তখনই তারা জানতে পারে, এই মামলায় যুক্ত রয়েছেন কবিতা। কবিতাকে দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত বছর জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। তবে সম্প্রতি তিনি ইডির তলব এড়িয়ে যান। এই মামলার চার্জশিটে ইডির অভিযোগ ছিল, দিল্লির তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা মদ সংক্রান্ত নীতির ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী সিসৌদিয়া আবগারি নীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে দক্ষিণ ভারতের যে ব্যবসায়িক সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন, কবিতা তার ৬৫ শতাংশের মালিক। এই মামলাতেই গত বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল।