থৌনাওজাম বৃন্দা। নিজস্ব চিত্র।
খাতায়-কলমে এখনও তিনি মণিপুর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। কিন্তু কাজে যাওয়া ছেড়েছেন। ইস্তফা দেওয়ার আগেই ভোটে লড়ার কথা ঘোষণা করে রীতিমতো সমর্থকদের নিয়ে মিছিল বার করে ফেললেন এমপিএস অফিসার থৌনাওজাম বৃন্দা।
বৃন্দা বরাবরই সংবাদ শিরোনামে। নিজে পুলিশকর্তা হলেও বিয়ে করেছেন রাজ্য তথা উত্তর-পূর্বের অন্যতম প্রধান জঙ্গি নেতা তথা মণিপুর রাজবংশের বর্তমান প্রজন্মের বংশধর রাজকুমার মেঘেনের ছেলেকে। দেশের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতার পুত্রবধূ হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে পদত্যাগ করেন। মুখরক্ষা করতে তখনকার কংগ্রেস সরকার বৃন্দাকে কাজে ফেরায়। মাদক নিয়ন্ত্রণ শাখার এএসপি হিসেবে বৃন্দা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের হাত থেকে সাহসিকতার পুরস্কার নেন। ২৭ কোটি টাকার মাদক বাজেয়াপ্ত করা বৃন্দা পুরস্কৃত হন জাতীয় স্তরেও। কিন্তু মাদক-সহ হাতেনাতে গ্রেফতার হওয়া চান্ডেল স্বশাসিত পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এল ঝৌকে মুক্ত করার জন্য খোদ মুখ্যমন্ত্রী চাপ দিতে থাকলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন বৃন্দা। এমনকি ঝৌকে জামিন দেওয়ায় আদালতের বিচারককেও অশ্লীল ভঙ্গি দেখিয়ে অপমান করেন। ফেসবুকে সরকার ও বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরব হওয়া বৃন্দাকে সাসপেন্ড করা হয়। পুলিশ তাঁকে আটকও করে।
কর্মক্ষেত্র ছেড়ে বৃন্দা রাজনীতিতে নামতে প্রস্তুত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তৈরি তাঁর ফ্যান ক্লাব। রবিবার তিনি ঘোষণা করেন, ইয়াইসিকুল কেন্দ্র থেকেই ভোটে লড়বেন। সমর্থকদের নিয়ে বিকেলে তিনি মিছিল বার করলে পুলিশ বাধা দেয়। চলে তর্কাতর্কি।
শোনা যাচ্ছে, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে চাকরি খোয়াতে চলা বৃন্দা বিজেপিতেই যোগ দিতে পারেন। বর্তমানে ইয়াইসিকুলের বিধায়ক রাজ্যের মন্ত্রী টি সত্যব্রত। বৃন্দা নিজে বলছেন, “প্রশাসনের অংশ হয়ে শাসনযন্ত্র ও রাজ্যকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারিনি। রাজনীতি প্রতি পদে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতিতে নেমেই মণিপুরকে দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা করব।”