ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
মুখ খুললে কুস্তির সাধ ঘুচিয়ে দেবেন বলে খেলোয়াড়দের হুমকি দিতেন ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ, আদালতে দাবি করেছে দিল্লি পুলিশ। দিল্লির রাউস অ্যাভেনিউ কোর্টে বৃহস্পতিবার বিজেপি সাংসদ এবং ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্থার মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই চার্জ গঠনের জন্য নতুন করে সওয়াল শুরু করে পুলিশ এই দাবি করেছে কিছু মহিলা কুস্তিগিরের বয়ান তুলে ধরে।
অভিযোগকারিণীদের এক জনের বিবৃতি কোর্টে উদ্ধৃত করেন দিল্লি পুলিশের আইনজীবী অতুল শ্রীবাস্তব। ওই মহিলা কুস্তিগিরের দাবি, ব্রিজভূষণ তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘কুস্তি খেলে যেতে চাইলে চুপ করে থাকবে... আমি যেমন কেরিয়ার তৈরি করে দিতে পারি, বরবাদও করতে পারি।’’ যা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারায় অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে ভীতি প্রদর্শনের মধ্যে পড়ে বলে দাবি করা হয়। এক মহিলা কুস্তিগিরের অভিযোগ, ব্রিজভূষণ তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘ধুতি-কুর্তায় আমায় কেমন লাগছিল?’’ ‘‘এমন প্রশ্ন কোনও মেয়েকে করা যায়,’’ আদালতে প্রশ্ন তোলেন পুলিশের আইনজীবী। দাবি করা হয়, ব্রিজভূষণের সহ-অভিযুক্ত এবং কুস্তি সংস্থার সহ-সচিব বিনোদ তোমরের দফতরে শুধু মেয়েদের প্রবেশে ছাড় ছিল। সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারিণীর দাবি, বিনোদের দফতরে কোনও ছেলেকে চৌকাঠ পেরোতে দেওয়া হত না। পুলিশের আইনজীবী বলেন, ‘‘এর থেকেই উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়।’’
এক মহিলা কুস্তিগিরকে জড়িয়ে ধরে ব্রিজভূষণ পরে দাবি করেছিলেন পিতৃস্নেহে তা করেছেন, এমন ঘটনার উল্লেখ করে পুলিশের আইনজীবী কোর্টে বলেন, ‘‘উনি বলেছিলেন, বাবার মতো বলে এমনটা করেছেন। অপরাধীর মন সব সময় সজাগ থাকে। এই ব্যাখ্যাটাই বা দিয়েছিলেন কেন?’’
গত বছর ১৫ জুন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ (মহিলার সম্ভ্রমহানির উদ্দেশ্যে নিগ্রহ বা জবরদস্তি করা), ৩৫৪এ (যৌন হেনস্থা), ৩৫৪ডি (চুপিচুপি নজর রাখা) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক হুমকি) ধারায় চার্জশিট পেশ করেছিল দিল্লি পুলিশ। রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে বিচারক হরজিৎ সিংহ যশপাল গত ২০ জুলাই ব্রিজভূষণের জামিন মঞ্জুর করেন এবং বিনোদকে কুস্তি সংস্থার সহ-সচিবের পদ থেকে সাসপেন্ড করেন। বিস্তারিত সওয়াল-জবাবের পরে নির্দেশ স্থগিত রেখেছিলেন তিনি।
বিচারক যশপাল অন্য কোর্টে বদলি হওয়ার পরে শুনানি চলছে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রিয়াঙ্কা রাজপুতের এজলাসে। ব্রিজভূষণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। মক্কেলের ‘সামাজিক দায়দায়িত্বের’ জন্য আদালতে সশরীর হাজিরা থেকে অব্যাহতি চাওয়া হয়েছিল বলে তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন।