ছবি পিটিআই।
নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে প্রয়োজনের চেয়ে অকারণে অনেক বেশি অস্ত্র মজুত করছে ভারত! গত বুধবার ফ্রান্স থেকে পাঁচটি রাফাল যুদ্ধবিমান ভারতে এসে পৌঁছনোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ভাবেই ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করল পড়শি পাকিস্তান। ভারতের এই শক্তিবৃদ্ধিতে প্রমাদ গুনছে চিনও। যদিও মুখে সেই কথা স্বীকার করছে না তারা। শুধু ভারত যাতে কোনও রকম আগ্রাসী পদক্ষেপ না-করে, তা নিয়ে আজ দিল্লিকে সতর্ক করেছে বেজিং। আর সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম বলছে, রাফাল নেহাতই ‘তৃতীয় প্রজন্মের যুদ্ধবিমান’। তুলনায় তাদের চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান জে-২০ ঢের বেশি শক্তিশালী।
প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান বিএস ধানোয়া শুধু নন, রাফালের অন্তর্ভুক্তিকে অনেকেই ‘গেমচেঞ্জার’ বলছেন। বলা হচ্ছে, দক্ষিণ-এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্যে ভারতের অনেকটাই শক্তি বাড়াল রাফাল। ভারতের এই এগিয়ে থাকাটাই ভাবাচ্ছে ইসলামাবাদকে। হরিয়ানার অম্বালা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে রাফাল নামার পর-পরই ভারতের সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে পাকিস্তান ও চিনের।
পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আয়েশা ফারুকি কাল সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘ভারতের এই অকারণে অসঙ্গতিপূর্ণ অস্ত্র মজুত যথেষ্ট গোলমেলে। আর তা ছাড়া, অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমান যে ভাবে পারমাণবিক অস্ত্রবহনে সক্ষম, তাতে আরও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে ভারতের অভিপ্রায়। সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।’’ পাকিস্তানের আশঙ্কা, দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে এ বার শুরু হবে অস্ত্র কেনার দৌড়। শান্তির ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার মুখে। ভারতকে এই ভাঁড়ার ভরা ঠেকিয়ে রাখতে আন্তর্জাতিক মহলেরও হস্তক্ষেপ দাবি করেছে ইসলামাবাদ। রাফাল দেশে আসার পর-পরই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে বলতে শোনা গিয়েছিল— যারা ভারতের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করতে চায়, তারা এ বার সাবধান হয়ে যাক। পাল্টা খোঁচা দিতে ছাড়েনি বেজিংও।
কিন্তু রাফালে কেন এত গাত্রদাহ দু’দেশের? অনেকেই বলছেন, আসলে এটা ভয়। ১৯৯৭-এ রাশিয়ার থেকে সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমান কেনার ২৩ বছর পরে ভারতের এই রাফাল কেনায় চমকে গিয়েছে দুই পড়শি দেশ। এখন তাই কেউ আগাম নালিশ করে, কেউ সতর্ক করে জল মাপতে চাইছে। এটা প্রায় স্পষ্ট যে, প্রযুক্তিগত ভাবে রাফাল যতখানি এগিয়ে, চিন বা পাকিস্তান কারও কাছেই এর পাল্টা জবাব নেই। সেই কারণেই এত বিচলিত দুই পড়শি। বিতর্ক সঙ্গী করেই ফ্রান্সের থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি হয়েছে ভারতের। যার মধ্যে ছ’টি ব্যবহৃত হবে প্রশিক্ষণের কাজে। বাকি ওই ৩০টির মধ্যে দু’দিন আগে আসা পাঁচটি রাফাল নিয়েই চিন্তা বাড়ছে চিন ও পাকিস্তানের।