নিকিতা জেকব এবং শান্তনু মুলুক। ছবি: সংগৃহীত।
‘টুলকিট’-কাণ্ডে অভিযুক্ত নিকিতা জেকব এবং শান্তনু মুলুকের আগাম জামিনের আবেদন শুনবে বম্বে হাইকোর্ট। দিল্লি পুলিশের গ্রেফতারি এড়াতে ওই দু’জনই হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চে আলাদা ভাবে আবেদন করেছেন। মঙ্গলবার দুপুর ২টোয় নিকিতার আবেদন শুনবেন বিচারপতি পিডি নাইকের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ। অন্য দিকে, সন্ধ্যায় বিচারপতি বিভা কাঁকনবাডির কাছে শান্তনুর হয়ে সওয়াল করবেন তাঁর আইনজীবীরা।
কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে পরিবেশ আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গের পোস্ট করা ‘টুলকিট’ নেটমাধ্যমে শেয়ার করে দিল্লি পুলিশের কোপে পড়েছেন বেঙ্গালুরুর আন্দোলনকর্মী দিশা রবি-সহ মুম্বইয়ের আইনজীবী নিকিতা এবং পুণের ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু।
রবিবার দিশাকে গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই দু’জনের বিরুদ্ধেও জামিন অযোগ্য ধারা প্রয়োগ করেছে দিল্লি পুলিশের সাইবার অপরাধদমন শাখা। অভিযোগ, কৃষক আন্দোলন ঘিরে দেশের ভাবমূর্তিতে আঘাত হানতেই ওই ‘টুলকিট’ শেয়ার করেছেন তাঁরা।
দিল্লি পুলিশের আরও অভিযোগ, ভারত সরকারের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক এবং আর্থ-সামাজিক স্তরে যুদ্ধ ঘোষণার করার লক্ষ্যও রয়েছে তাঁদের। ৪ ফেব্রুয়ারিতে করা একটি অভিযোগপত্রে পুলিশের দাবি, খলিস্তান আন্দোলনের সমর্থনকারীরাই থুনবার্গের পোস্ট করা ‘টুলকিটে’র পিছনে রয়েছেন। দিশার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই দেশদ্রোহিতারও অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
১২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে ৪ সপ্তাহের ট্রানজিট আগাম জামিনের আবেদন করেছেন নিকিতা এবং শান্তনু। গোটা ঘটনায় নিজের নাম জড়ানোর পর নিকিতার দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে পুলিশ। হাইকোর্টে আবেদনে নিকিতার দাবি, ১১ ফেব্রুয়ারি পুলিশ আধিকারিকেরা তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভ ও পেন ড্রাইভ বাজেয়াপ্ত করেন। পাশাপাশি, তাঁকে ১৩ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে বয়ান নথিভুক্তি করে। ‘টুলকিট’-কাণ্ডে তাঁকে সাক্ষী না অভিযুক্ত— ঠিক কী হিসাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন বলে দাবি নিকিতার। যদিও নিকিতাকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি অস্বীকার করেছে দিল্লি পুলিশের একটি সূত্র। ওই সূত্রের পাল্টা দাবি, দিল্লি পুলিশের তদন্তে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিলেও গা-ঢাকা দিয়েছিলেন নিকিতা।
নিকিতার মতো ‘টুলকিট’-কাণ্ডে দিল্লি পুলিশের নজরে পড়ার পর আশঙ্কায় রয়েছেন পুণের বাসিন্দা শান্তনুও। তাঁর আইনজীবী সতেজ যাদবের দাবি, কৃষক আন্দোলনকারীদের সমর্থন করলেও তাঁর মক্কেল বা দিশা-নিকিতারা এ নিয়ে দেশে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টিকামী নন। ‘দেশবিরোধী’র ভুয়ো তকমায় যে শান্তনুর জীবনে কালিমা লেপন করবে, আবেদনে তা-ও উল্লেখ করেছেন তাঁর আইনজীবী। শান্তনুর অভিযোগ, আইন বহির্ভূত ভাবে গত ৩ দিন ধরে মহারাষ্ট্রে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এমনকি, তাঁর বয়স্ক মা-বাবার উপরেও চাপ সৃষ্টি করছে তাঁরা।