পেমা খান্ডু। — ফাইল চিত্র।
ভোটের আগেই মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু-সহ অরুণাচল প্রদেশ বিধানসভার ১০ জন বিজেপি প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। রবিবার বাকি ৫০টি বিধানসভা ভোটের গণনাতেও বজায় রইল বিজেপির বিপুল জয়ের ধারা।
৬০ আসনের অরুণাচল বিধানসভায় বিজেপির ঝুলিতে এসেছে ৪৬টি (১০টি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়-সহ) আসন। পাঁচটিতে জিতেছেন পড়শি রাজ্য মেঘালয়ের শাসকদল ‘ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি’ (এনপিপি) প্রার্থীরা। এনসিপি ৩, পিপলস্ পার্টি অফ অরুণাচল (পিপিএ) দু’টি এবং কংগ্রেস একটি আসনে জিতেছে। নির্দল প্রার্থীরা জিতেছেন তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে। বিজেপি সূত্রের খবর, পেমাই আবার মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন সে রাজ্যে।
গত ১৯ এপ্রিল অরুণাচলের পাশাপাশি এবং ৩২ আসনবিশিষ্ট সিকিমে ভোট হয়েছিল এক দফায়। তার সঙ্গেই অরুণাচলে লোকসভার দু’টি আসনে এবং সিকিমের একমাত্র কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহণ হয়েছিল। রবিবার শুধুমাত্র বিধানসভা ভোটের গণনা হল। অরুণাচল এবং সিকিমে লোকসভা ভোটের গণনা হবে আগামী মঙ্গলবার (৪ জুন) দেশের বাকি অংশের সঙ্গেই। প্রসঙ্গত, অরুণাচল এবং সিকিমের পাশাপাশি সারা দেশে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশাতেও। ওই দুই রাজ্যে গণনা হবে ৪ মে।
২০১৪-র বিধানসভা ভোটে জিতে অরুণাচলে কংগ্রেস সরকার গঠন করলেও পরবর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু অধিকাংশ বিধায়ককে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৯-এর ভোটে সেখানে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়েছিল পদ্মশিবির। এ বার কংগ্রেস, এনপিপির মতো বিরোধী দলগুলি থাকলেও সেখানে বিজেপির ক্ষমতা পুনর্দখল কার্যত নিশ্চিত বলেই বিভিন্ন জনমত সমীক্ষার ইঙ্গিত ছিল। কার্যক্ষেত্রেও তাই ঘটল।
গত ১৫ বছরে ইটানগরে বহু বার রাজনৈতিক টানাপড়েন হয়েছে। এক সময় কংগ্রেস দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল অরুণাচল। ২০১১ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পেমার পিতা তথা তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী দোর্জি খান্ডুর মৃত্যু হয়। এর পরে অশান্তি শুরু কংগ্রেসের অন্দরে। প্রথমে জারবম গ্যামলিন মুখ্যমন্ত্রী হন। কংগ্রেসে শুরু হয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কিন্তু কংগ্রেস হাইকমান্ডের সমর্থনে ক্ষমতা দখল করেন নাবাম টুকি। ২০১৪ সালের ভোটে কংগ্রেস ৪২ আসনে জিতলে টুকি ফের মুখ্যমন্ত্রী হন।
কিন্তু কালিখো পুলের নেতৃত্বে পেমা-সহ বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কেরা তাঁকে সরিয়ে বিজেপির সমর্থনে সরকার গড়েন। মামলা আদালতে গড়ায়। রাষ্ট্রপতি শাসনে টুকি ক্ষমতা ফিরে পেলেও কংগ্রেস নেতৃত্ব পেমার এবং তাঁর অনুগামীদের দাবি মেনে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করেন। পরে পেমার নেতৃত্বে অধিকাংশ বিধায়ক দলবদল করে পিপিএতে যোগ দেন। আঞ্চলিক দল পিপিএ সরকার গড়ে। পরে তাঁরা ফের দল বদলে বিজেপিতে যোগ দেন। এর পর ২০১৯-এর বিধানসভা ভোটে জিতে বিজেপি অরুণাচলে ক্ষমতা দখল করে।