Manipur Clash

মণিপুরে হিংসা থামাতে তিনটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হোক রাজ্যকে, প্রস্তাব বিজেপি বিধায়কের

মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলার সাইকত কেন্দ্রের বিধায়ক হাওকিপ জানিয়েছেন, রাজ্যে জাতিগত যে বিভাজন রয়েছে, তাকে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক স্বীকৃতি দেওয়া ছাড়া আপাতত আর কোনও উপায় নেই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

ইম্ফল শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৩ ১৬:১৬
Share:

মণিপুরের বিজেপি বিধায়ক পাওলিয়েনলাল হাওকিপ। ছবি: টুইটার।

তিন মাস ধরে চলা মণিপুরের গোষ্ঠী হিংসায় লাগাম পরাতে এ বার রাজ্যকে তিনটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার প্রস্তাব দিলেন বিজেপি বিধায়ক পাওলিয়েনলাল হাওকিপ। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলার সাইকত কেন্দ্রের এই বিধায়ক জানিয়েছেন, রাজ্যে জাতিগত যে বিভাজন আছে, তাকে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক স্বীকৃতি দেওয়া ছাড়া আপাতত আর কোনও উপায় নেই। কুকিরা যে দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আলাদা প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি তুলছেন, সেই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন তিনি।

Advertisement

ওই সাক্ষাৎকারে হাওকিপ বলেন, “আমি যে ভাবে বিষয়টাকে দেখছি, তা হল, জাতিগত বিভাজনকে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক স্বীকৃতি দেওয়া হোক। সে ক্ষেত্রে মণিপুরকে ভেঙে তিনটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হোক।” হাওকিপের প্রস্তাব মোতাবেক, গোটা রাজ্যকে কুকি, মেইতেই এবং নাগা অধ্যুষিত অঞ্চলকে আলাদা তিনটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হবে। যদিও তাঁর এই প্রস্তাবের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই অনেকেই এর বিরোধিতা করেছেন। সমালোচকদের বক্তব্য, মণিপুরের অনেক গ্রাম, এমনকি জেলাতেও সব ধরনের জনজাতির মানুষ বসবাস করেন। তাই ও ভাবে রাজ্য ভাগ করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া রাজ্য ভাগের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

মণিপুরের মোট সংখ্যার ৫৩ শতাংশ মেইতেই জনগোষ্ঠীর মানুষ, যাঁদের বাস মূলত ইম্ফল উপত্যকা অঞ্চলে। অন্য দিকে রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলে বাস কুকি এবং নাগাদের, শতাংশের বিচারে যাঁদের সংখ্যা ৪০। গত ৩ মে থেকে কুকি এবং মেইতেইদের মধ্যে সংঘাতের কারণেই উত্তপ্ত থেকেছে মণিপুর। অবশ্য সে রাজ্যে কুকি এবং নাগাদের মধ্যে সংঘাতেরও দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি, ‘ইন্ডিয়া টুডে’-তে লেখা একটি নিবন্ধে হাওকিপ জানিয়েছিলেন, রাজ্যে চলা জাতিহিংসায় সরকার জড়িত বলেই এত দিন পরেও হিংসায় লাগাম টানা যাচ্ছে না। তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত হয়। হাওকিপ লেখেন, “সরকার যে বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত তার সব চেয়ে বড় প্রমাণ এই যে, জাতিগত এবং সম্প্রদায়গত হিংসা দিয়ে যে ঘটনার সূত্রপাত, সেই ঘটনাকে মাদক চোরাচালানকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের যুদ্ধ বলে ব্যাখ্যা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।” চাইলে এই হিংসা এড়ানো যেত বলেও দাবি করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন এবং তাঁর পরিচালিত সরকারকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে কটাক্ষ করে হাওকিপ লেখেন, “একটি পক্ষপাতদুষ্ট সরকার যে কোনও জায়গাতেই শান্তিপ্রতিষ্ঠার পক্ষে প্রধান অন্তরায়।”

হাওকিপ জাতিগত পরিচয়ে কুকি। কিছু দিন আগে মণিপুরের যে দশ জন বিধায়ক (যাঁদের মধ্যে সাত জন বিজেপির) কুকি অধ্যুষিত জেলাগুলিতে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনকে চিঠি লিখেছিলেন, তাঁদের মধ্যে হাওকিপ অন্যতম। যদিও মুখ্যমন্ত্রী সেই আর্জি খারিজ করে দিয়ে জানিয়েছিলেন, মণিপুরের অখণ্ডতাকে রক্ষা করা হবে। বহু দিন ধরেই বীরেনকে সরিয়ে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি তুলছে বিরোধী দলগুলি। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা জানালেন দলেরই বিধায়ক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement