জোট চূড়ান্ত হওয়ার পরে দুষ্মন্তকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে জে পি নাড্ডা, অমিত শাহ এবং মোনহর লাল খট্টর। ছবি: পিটিআই
প্রথম থেকেই দুষ্মন্ত চৌটালা দাবি করে আসছিলেন, ‘চাবি’ তাঁর হাতেই রয়েছে। শেষ পর্যন্ত সেই চাবিতেই খুলল হরিয়ানায় সরকার গঠনের রাস্তা।দুষ্মন্তকে উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ দিয়ে সরকার গঠন নিশ্চিত করল বিজেপি। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর জট খোলে। সিদ্ধান্ত হয়, জেজেপি সুপ্রিমো দুষ্মন্তকে উপ-মুখ্যন্ত্রীর পদ দেওয়া হবে।
‘দাগী’ নির্দল বিধায়ক গোপাল কান্ডা বিজেপিকে নিঃস্বার্থ সমর্থনের প্রস্তাব দিলেও তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করছিল। দলের অন্দরমহল সূত্রে খবর, বিরোধীরা তো বটেই, দলের অন্দরেও তাঁকে দলে নেওয়ায় আপত্তি তুলেছিলেন নবনির্বাচিত বিধায়কদের একাংশ। আবার উমা ভারতী প্রকাশ্যেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। তার পরে বিজেপিও বিকল্প হিসেবে সেই দুষ্মন্তর দিকেই ঝুঁকতে শুরু করে। প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়ে যায়। এর পর এ দিন সন্ধ্যায় দিল্লিতে অমিত শাহের বাড়িতে যান দুষ্মন্ত। সেখানেই সরকার গঠনের ছক চুড়ান্ত হয়। বিজেপির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় জোটের কথা।
৯০ আসনের হরিয়ানা বিধানসভায় কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বিজেপি ম্যাজিক সংখ্যা (৪৬) থেকে ৬ আসন দূরে। কংগ্রেসের আসন সংখ্যা ৩১। দুষ্মন্তের দলের প্রার্থীরা জিতেছেন ১০টি আসনে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপিকে নিঃশর্ত সমর্থনের কথা জানান নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতে আসা গোপাল কান্ডা। তাঁর সঙ্গে আরও পাঁচ বিধায়ক রয়েছেন বলে দাবি করার পর তাঁদের সঙ্গে বৈঠকও করেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির তরফে ঘোষণাও করা হয়, নির্দলের বিধায়করা তাদের সঙ্গে রয়েছেন।
এর পরেই দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। নবনির্বাচিত বিধায়কদের একাংশ তাঁকে নিয়ে সরকার গড়ার ক্ষেত্রে তীব্র আপত্তি করেন। আবার উমা ভারতী টুইটারে লেখেন, ‘...ভোটে জিতে আসলেই তাঁর সব দোষ খারিজ হয়ে যায় না।’ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার কটাক্ষ, যারা নৈতিকতা-অনৈতিকতার ধার ধারে না, সরকার গড়তে তাঁদের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে বিজেপি-কে।’’
আরও পড়ুন: গোপাল কান্ডার সমর্থন প্রশ্নে দু’ভাগ বিজেপি, তীব্র ভর্ৎসনা বিরোধীদেরও
আরও পডু়ন: নেপথ্যে ‘ক্ষমতার দম্ভ’! মহারাষ্ট্রে খারাপ ফল নিয়ে বিজেপিকে তোপ দেগে চাপ বাড়াচ্ছে শিবসেনা
এই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে একমাত্র বিকল্প হিসেবে দুষ্মন্তর দিকেই নজর ঘোরাতে শুরু করেন বিজেপি নেতৃত্ব। অন্য দিকে দুষ্মন্তও আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন, বিজেপি বা কংগ্রেস— কেউই তাঁর কাছে অচ্ছুত নয়। যে দল তাঁদের যোগ্য সম্মান দেবে, তাদের সমর্থন করবে জেজেপি। গোপাল কান্ডা অস্বস্তির পরে দুষ্মন্ত অবস্থান আরও নরম করেছিলেন বলেও জেজেপি সূত্রে খবর। তার পরে অমিত শাহের বাড়িতে বৈঠকের পরেই দুষ্মন্তকে নিয়ে হরিয়ানা দখল চূড়ান্ত করে বিজেপি।