গুজরাতে দলীয় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নিজের বাসভবনে বৈঠকে বসলেন নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
হিমাচলপ্রদেশের ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে আজ বিকেলে। তার পরেই রাতে ওই রাজ্য এবং ভোটমুখী গুজরাতে দলীয় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নিজের বাসভবনে বৈঠকে বসলেন নরেন্দ্র মোদী। ছিলেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা, অমিত শাহ, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল-সহ কয়েকজন শীর্ষ নেতা।
সূত্রের মতে, আজকের বৈঠকে ভোটমুখী দুই রাজ্যে দলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। বিজেপি সূত্রের দাবি, দুই রাজ্যের মধ্যে হিমাচল প্রদেশে শাসক শিবিরের প্রতি আমজনতার ক্ষোভ থাকলেও, ওই রাজ্যে ফের ক্ষমতায় আসার প্রশ্নে অনেকাংশেই নিশ্চিত দল। দল মনে করছে, ওই রাজ্যে আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেসের মধ্যে সরকার বিরোধী ভোটের ভাগাভাগি হওয়ার পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে, ভোটবাক্সে তার ফায়দা পাবেন বিজেপি প্রার্থীরা। দলের একাংশের মতে, শেষ মুহূর্তে ওই রাজ্যে হিন্দুত্ব ও জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলে ভোট বৈতরণী পার হতে বিশেষ সমস্যা হবে না। আজ দুপুরে লোকসভার প্রস্তুতি নিয়ে দলীয় পদাধিকারীদের সঙ্গে দলের সদর দফতরে বৈঠক করেন জেপি নড্ডা।
হিমাচলের তুলনায় শীর্ষ নেতৃত্বকে অনেক বেশি চিন্তায় রেখেছে গুজরাত। প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাতে গত ২৭ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। সময়ের সঙ্গেই স্থানীয় মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গত বিধানসভা নির্বাচনে যে ভাবে পাটীদার ভোট কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল, তাতে বিপাকে পড়তে হয়েছিল বিজেপিকে। দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা অনুযায়ী, গ্রামীণ গুজরাতের একটি বড় অংশের মানুষ শাসক শিবিরের উপরে ক্ষুব্ধ। কৃষকদের দুরবস্থা, ফসলের দাম না পাওয়ার কারণে কৃষক সমাজের বড় অংশ পরিবতর্নের পক্ষে। তা ছাড়া অর্থনীতির বেহাল দশা, বেকারত্বের কারণে যুব সমাজের একাংশ আস্থা হারিয়েছে বিজেপি সরকারে। অন্য দিকে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার দাবি প্রভাব ফেলেছে গুজরাতের শহরে এলাকাগুলিতে।
বিজেপি সূত্রের মতে, রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়া যাত্রা ইতিমধ্যেই জনমানসে সাড়া ফেলেছে। যার জবাবে সরকারের সাফল্যের দিকগুলি তুলে ধরতে ওই রাজ্যে গৌরব যাত্রা দু’দিন আগে শুরু করেছে শাসক শিবির। গত বিধানসভা নির্বাচনেই বিজেপি, পেয়েছিল ৯৯টি আসন, কংগ্রেস ৭৭টি, পরে দলত্যাগের ফায়দা নিয়ে বিজেপির আসন দাঁড়ায় ১১১। ফলে দল বুঝতে পারছে, এ বারও তেমন কিছু হলে তা নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। সূত্রের মতে, তাই আজকের বৈঠকে ওই রাজ্যে গতবারের চেয়ে ভাল ফল নিশ্চিত করার উপরে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের মতে, ভোট ঘোষণার পরে অন্তত দেড় ডজন সভা করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। একই সঙ্গে রাজ্যের যে এলাকাগুলিতে দল অপেক্ষাকৃত দুর্বল সেই এলাকাগুলিকে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করে জনসংযোগ বাড়াতে রাজ্য নেতৃত্বকে পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।