ত্রিপুরায় বিধায়কদের পেনশন নীতিতে বদল আনল বিপ্লব দেব সরকার। ফাইল ছবি।
ত্রিপুরায় প্রাক্তন বিধায়কদের পেনশন ও অন্যান্য ভাতা সংক্রান্ত সরকারি নীতিতে বড় পরিবর্তন। এখন থেকে পাঁচ বছরের বিধায়ক পদের মেয়াদ পূর্ণ না করলে মিলবে না পেনশন। বাম জমানায় বিধায়কদের অবসরকালীন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পেতে অন্তত ৪ বছর পদে থাকতে হত। কিন্তু বিপ্লব দেবের বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসে তা এক দিন করে দেয়। বর্তমানে আবার পরিবর্তন করা হল সেই নিয়মে। যাকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ত্রিপুরার তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, বিধায়কদের নিজের কাজের প্রতি দায়িত্ববোধ আরও বাড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এখন থেকে সমস্ত বর্তমান বিধায়ককে এই নিয়ম মেনে চলতে হবে। ভবিষ্যতে যাঁরা ভোটে জিতে বিধায়ক হবেন, তাঁদেরও পেনশন এবং অন্যান্য ভাতা পেতে এই নিয়ম পালন বাধ্যতামূলক।’’
এই সিদ্ধান্তের কারণ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জল্পনা শুরু হয়েছে। ঘটনাচক্রে রবিবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় তৃণমূলে যোগ দেন বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস। এই যোগদানের সঙ্গে সরকারি নীতিতে বদলের কি কোনও সম্পর্ক আছে?
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ এই প্রসঙ্গে বিপ্লব দেব সরকারকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের পদক্ষেপে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ত্রিপুরা বিজেপি। বিধায়কদের উপর এ ভাবে চাপ তৈরি করা তারই অঙ্গ। কিন্তু আমরা বিধায়ক ভাঙিয়ে সরকার করব না। মানুষের সমর্থন নিয়ে ক’দিন পর তৃণমূল ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসছে। আমাদের উত্থানে বিপ্লব দেব সরকারের থরহরি কম্পমান। যত দিন যাবে ততই ভয় বাড়বে।’’
মানিক সরকার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ত্রিপুরায় প্রাক্তন বিধায়করা ১৭ হাজার ২৫০ টাকা করে পেনশন পেতেন। সঙ্গে মিলত প্রাক্তন বিধায়ক ও তাঁর সঙ্গীর চিকিৎসার যাবতীয় খরচ। ২০১৮-য় বিজেপি-আইপিএফটি সরকার তৈরি হওয়ার পর, অন্যান্য সুযোগ সুবিধা একই থাকলেও, পেনশনের পরিমাণ বেড়ে হয় ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা। পেনশন পাওয়ার যোগ্যতা ছিল পাঁচ বছরের বিধায়ক পদের মেয়াদের অন্তত ৪ বছর পূর্ণ করা। ২০১৯-এ তা বদলে এক দিন করে বিপ্লব দেবের সরকার। অর্থাৎ বিধায়ক পদে শপথ নিলেই যে কেউ পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা তথা ভাতার জন্য বিবেচিত হতেন। গত মঙ্গলবারের কেবিনেট বৈঠকে তাতে ফের বদল এল। এ বার থেকে ত্রিপুরায় প্রাক্তন বিধায়কদের পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পেতে ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করা বাধ্যতামূলক হয়ে গেল।