টানোট বিজয় স্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর জয়ের অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত লঙ্গেওয়ালা সীমান্তের টানোট। শনিবার রাজস্থানের জয়সলমেরে। পিটিআই
২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগেই কংগ্রেসের হাত থেকে রাজস্থান কেড়ে নিতে মরিয়া বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের বিধানসভা কেন্দ্র যোধপুর থেকে আজই ভোটের প্রচার শুরু করে দিল তারা। যোধপুরে বিজেপির ওবিসি মোর্চার বৈঠক থেকে কংগ্রেস সরকারকে উৎখাত করার ডাক দিয়ে নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করলেন অমিত শাহ।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল ওবিসি ভোট। আর রাজস্থানের জনসংখ্যার প্রায় ৫২ শতাংশ ওবিসি সম্প্রদায়ের। তাই সেখানে ওবিসি ভোটকেই পাখির চোখ করছেন বিজেপি নেতারা। এই সম্প্রদায়ের ভোটকে বিজেপির ছাতার তলায় নিয়ে আসার চেষ্টায় ওবিসি মোর্চার জাতীয় কার্যসমিতির বৈঠকের জন্য রাজস্থানকে বেছে নিয়েছে দল। যোধপুর বা মারওয়ার হল রাজস্থানের সবচেয়ে বড় ডিভিশন। এই ডিভিশনে রয়েছে যোধপুর, বাড়মের, জয়সলমের, জালৌর, শিরোহী ও পালী— এই ছ’টি জেলা। এখানে রয়েছে রাজস্থানের অনেকগুলি বিধানসভা কেন্দ্র। মূলত ওবিসি অধ্যুষিত এই এলাকাগুলিতে ভাল ফল হলে রাজস্থানে দলকে ক্ষমতায় ফেরানো যেতে পারে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা।
অমিত শাহ ছাড়াও আজ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ওবিসি মোর্চার জাতীয় সভাপতি কে লক্ষণ, কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবেরা। ওবিসিদের জন্য সাংবিধানিক মর্যদাপ্রাপ্ত জাতীয় কমিশন গঠন, ডাক্তারি পড়ার ক্ষেত্রে ওবিসিদের ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের মতো যে সিদ্ধান্তগুলি মোদী সরকার নিয়েছে— তা বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেন ভূপেন্দ্র যাদব, কে লক্ষণেরা। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত নিজেও ওবিসি সম্প্রদায়ের। তাই তাঁকে হারাতে ওবিসি সম্প্রদায়কে মাঠে নামানোর ডাক দিয়েছেন অমিত শাহ।
তবে রাজস্থানে এ বার বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে বিজেপির সামনে। গত দু’দশক ধরে এখানে ওবিসির মর্যাদা পেয়ে আসছে জাঠেরা। যা নিয়ে তীব্র আপত্তি স্থানীয় গুজ্জরদের। এর আগের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে, ২০১৭ সালে গুজ্জরদের জন্য ওবিসি শ্রেণিতে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণা করেন। ফলে গুজ্জরদের সংরক্ষণ গিয়ে দাঁড়ায় ২৬ শতাংশে। সব মিলিয়ে রাজ্যে সামগ্রিক সংরক্ষণ পৌঁছে যায় ৫৪ শতাংশে। রাজ্য সরকারের ওই সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয় রাজস্থান হাই কোর্ট। সেই থেকেই জাঠেদের সংরক্ষণ কমানোর দাবিতে সরব গুজ্জরেরা। নিজেদের সংরক্ষণ ছাড়তে নারাজ জাঠেরাও। এই বিবাদের সমাধানের মধ্যেই রাজস্থানে দলের জয়ের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে বলে মনে করছে বিজেপি। এবার দেখার ব্যাপার, কোন পথে সমাধান সূত্র খুঁজে পান অমিত শাহেরা।