রাহুলের মন্তব্য নিয়ে সোমবার উত্তাল হল সাংসদ। ফাইল চিত্র।
সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের সূচনাতেই উত্তাল হল লোকসভা এবং রাজ্যসভা। রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বিলেতে দাঁড়়িয়ে দেশকে অপমান করার অভিযোগ তুলে বিজেপি সাংসদদের দাবি, অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে কংগ্রেস নেতাকে। রাহুলের সমর্থনে কেন্দ্রের শাসকদলকে পাল্টা বিঁধেছে কংগ্রেসও।
সোমবার লোকসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, “দেশের একজন সাংসদ হয়েও লন্ডনে দাঁড়িয়ে রাহুল ভারতকে অপমান করেছেন। আমরা তাঁর এই কাজকে নিন্দা জানাই।” এর পাশাপাশি তিনি জানান, রাহুলের উচিত দেশবাসীর সামনে ক্ষমা চাওয়া। রাজ্যসভায় রাহুলের বক্তব্যকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তার পরই বিজেপি সাংসদরা রাহুল ক্ষমা চাও স্লোগান তুলতে থাকেন। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, মূল বিষয়গুলি থেকে আলোচনার অভিমুখ অন্য দিকে সরাতেই পরিকল্পনামাফিক এই কাজ করছে বিজেপি।
রাহুলের সমর্থনে বক্তব্য রাখতে উঠে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, “যাঁরা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, তাঁরাই আবার গণতন্ত্র বাঁচানোর কথা বলছে।” রাহুলের পাশে দাঁড়াতে বেশ কয়েকদিন পর বিরোধী ঐক্যের প্রায় বিরল ছবিও দেখল সোমবারের সংসদ। ডিএমকে, জেডি(ইউ)-র মতো দলগুলি তো বটেই, আপ, বিআরএসের মতো দলও কংগ্রেসের পাশে এসে দাঁড়ায়। তবে বিরোধীদের যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিল না তৃণমূল। শাসক এবং বিরোধীদলের মধ্যে হইহট্টগোলের জেরে সংসদের অধিবেশন বেশ কিছু সময়ের জন্য মুলতুবি হয়ে যায়।
ব্রিটেন সফরে বারবারই মোদী জমানায় ভারতে গণতন্ত্রের অবক্ষয় নিয়ে সরব হন রাহুল। ব্রিটিশ সাংসদ বীরেন্দ্র শর্মার আমন্ত্রণে হাউস অব কমন্সের ব্রিটিশ সাংসদের একাংশের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল। কথা বলতে গিয়েই রাহুল দেখেন মাইক খারাপ। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় সংসদে কিন্তু মাইক খারাপ হয়নি। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কণ্ঠরোধ করা হয়েছে বিতর্কের। নোটবন্দি, জিএসটি, চিনা আগ্রাসনের মতো বিষয় নিয়ে সংসদে রাহুলের বক্তব্য, ‘‘আমার সংসদের বিতর্কের কথা মনে আছে। কিন্তু এখন আমরা সংসদের বদলে অন্য মঞ্চে বিতর্কের জন্য প্রশ্ন তৈরি করি। পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। সংসদের বাইরে দাঁড়ানোর জন্যও আমাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে আমাদের লড়াই চলবে।’’ রাহুলের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরই তাঁর বিরুদ্ধে ‘বিদেশের মাটিতে দেশকে অপমান’ করার অভিযোগ তুলছিল বিজেপি। কংগ্রেস নেতার নাম না করেই তাঁর সমালোচনায় মুখর উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়।