অবশেষে মৃত্যু মানুষখেকো বাঘের। ফাইল ছবি।
শেষ পর্যন্ত বন্দুকের গুলিতেই মৃত্যু হল বিহারের মানুষখেকো সেই বাঘের। তার আগে ১০ জনকে মেরেছে সে। বাঘটিকে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ জারি হয়েছিল। তার সন্ধানে পশ্চিম চম্পারণ জেলার বাল্মীকি ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের আশেপাশে ছড়িয়ে পড়েছিলেন প্রশিক্ষিত শিকারিরা। শনিবার তাঁদের গুলিতেই মৃত্যু হয় বাঘটির।
শুক্রবার, বিহারের বন দফতর বাঘটিকে দেখামাত্র গুলি করে মারার নির্দেশ জারি করে। যদিও সেপ্টেম্বর থেকেই মানুষখেকোর তাণ্ডবে অতিষ্ঠ মানুষ। গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বাঘটি এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছিল। গত শুক্রবার, আখ ক্ষেতে কর্মরত বছর পয়ত্রিশের এক ব্যক্তিকে টেনে নিয়ে বাঘটি। কিছু দূরে ওই যুবকের ঘাড় ভাঙা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। অথচ, ওই এলাকায় এক সঙ্গে আরও অনেকে ক্ষেতের কাজ করছিলেন। কেউই টের পাননি। তার পরেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাল্মীকি জাতীয় উদ্যানের আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা বন দফতরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে পথ অবরোধ করেন। আন্দোলনকারীদের হাতে হেনস্থার শিকার হন এক বনকর্তা। ভাঙচুর করা হয় বনবিভাগের একটি গাড়িতেও। তার পরেই তড়িঘড়ি বাঘটিকে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ জারি হয়। মানুষখেকোর গতিবিধি বুঝতে ওড়ানো হয় ড্রোন।
এরই মধ্যে শনিবার বাঘটি আবার হামলা চালায়। গোবর্ধন থানা এলাকার বালুয়া গ্রামে সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন এক মহিলা। বাঘটি মহিলা ও তাঁর সন্তানকে তুলে নিয়ে যায়। পরে দু’জনেরই মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
শনিবারই বন দফতরের শিকারিদের গুলিতে মৃত্যু হয় বাঘটির। বন দফতর সূত্রে খবর, বাঘটির বয়স সাড়ে তিন বছর। শুধু শিশু বা মহিলা নয়, বাঘটি সব বয়সের মানুষের উপরই হামলা চালিয়ে এ পর্যন্ত ১০ জনকে মেরে ফেলেছে।
বার বারই বন দফতরের পাতা ফাঁদ এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে মানুষখেকোটি। কিন্তু শনিবার কোনও ভুল করেননি শিকারিরা। নির্ভুল লক্ষ্যে গুলি চালিয়ে মানুষখেকো বাঘটিকে খতম করেন তাঁরা।
বাঘের মৃতদেহটি গ্রামে আনার পর গ্রামবাসীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, গ্রামবাসীরা উল্লাসে মৃত মানুষখেকোর গায়ের লোম ছিঁড়ে ফেলছেন। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।