অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে ড্রামে বেঁধে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। ছবি— পিটিআই।
অবিরাম বৃষ্টি। বিহারের ভাগলপুরে বন্যা পরিস্থিতি। এর জেরে ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। পরিস্থিতি এমনই যে হাতের কাছে নেই অ্যাম্বুল্যান্সও। কিন্তু শরীর খারাপ কি আর বৃষ্টি বুঝে হয়! ভাগলপুরের একটি গ্রামে এমনই এক ঘটনায় গুরুতর অসুস্থকে ড্রামে বেঁধে জলে নেমে পড়লেন আত্মীয়রা।
হাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, আগামী দু’দিনও বৃষ্টি চলবে। এ জন্য মানুষকে নিরাপদ জায়গায় থাকার আবেদন করা হয়েছে। কিষানগঞ্জ, পূর্ণিয়া জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। একাধিক নদী বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি জলের তলায়। আগামী দু’দিনও যে পরিস্থিতি একই থাকবে, তা স্পষ্ট আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে।
ভাগলপুর জেলাতেও একই অবস্থা। গঙ্গা উপচে সব কিছুই জলের তলায় চলে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, গঙ্গা মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রয়োজন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু জল থইথই চারদিক, অ্যাম্বুল্যান্স মিলবে কোথায়! উপায় বার করলেন গ্রামবাসীরাই। কয়েকটি ফাঁকা ড্রাম পর পর জুড়ে একটি নৌকার মতো বাহন তৈরি করা হয়। তাতেই শুইয়ে দেওয়া হয় গঙ্গাকে। ভাসতে ভাসতে সেই নৌকাই গঙ্গাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গ্রামপ্রধান জানিয়েছেন, গঙ্গা অত্যন্ত অসুস্থ। প্রথমে তাঁকে একটি শিবিরে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তার পর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। কোনও উপায় না পেয়ে ড্রাম দিয়ে নৌকা বানিয়ে গঙ্গাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কয়েক দিন আগেই অনেকটা একই রকম দৃশ্য দেখা গিয়েছিল মধ্যপ্রদেশে। নীমচ জেলায় এক মহিলার প্রসববেদনা উঠলে তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দরকার হয়। কিন্তু বানভাসি নীমচে অ্যাম্বুল্যান্স মিলবে কোথায়! অগত্যা একটি আর্থ মুভারের ডালায় ওই প্রসূতিকে বসিয়ে হাসপাতালে যাওয়া হয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার কার্যত একই পরিস্থিতিতে নিজেরাই নৌকা বানিয়ে রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটলেন ভাগলপুরের গ্রামবাসীরা।