সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
আদালত জানে, তার কী করা উচিত। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের বিরোধিতায় দায়ের হওয়া একগুচ্ছ মামলা আজ পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠিয়ে কেন্দ্রকে এই কথাই বলল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি শুরু হবে মামলাগুলির।
সংসদে পাশ হওয়া ‘জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন, ২০১৯’ এবং এই সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। আজ সেই মামলাগুলিই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস এ বোবদে এবং বিচারপতি এস এ নাজিরের বেঞ্চে উঠেছিল। কেন্দ্র ও জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনকে নোটিস পাঠিয়ে সাত দিনের মধ্যে জবাব চেয়েছে আদালত।
এই নোটিস দেওয়া নিয়েই আপত্তি তুলেছিল কেন্দ্র। সরকারের যুক্তি ছিল, এই নোটিসের প্রভাব ‘সীমান্তের ও-পারেও’ পড়বে। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে আদালতে যা বিতর্ক হবে, তা রাষ্ট্রপুঞ্জেও পৌঁছে যাবে। অর্থাৎ পাকিস্তান এবং ৩৭০ রদের বিরোধীরা সর্বোচ্চ আদালতের শুনানির দিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলেই পরোক্ষে ইঙ্গিত দেন তিনি। দুই পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি-পাল্টা যুক্তির মধ্যে বিচারপতিরা বলেন, ‘‘আমরা জানি, আমাদের কী করতে হবে। আমরা নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি। সেটা আর পাল্টাব না।’’
এ দিনই কাশ্মীরের সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামির সঙ্গে দেখা করার জন্য দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে শ্রীনগর যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে একই সঙ্গে আদালতের রায়, সাক্ষাৎ ছাড়া অন্য কিছু করতে পারবেন না।
৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের জেরে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের বিরোধিতায় প্রথম মামলা করেছিলেন আইনজীবী এম এল শর্মা। পরে মামলা করেন কাশ্মীরি আইনজীবী শাকির সাবির। উপত্যকাবাসীর অধিকার হরণের অভিযোগ তুলে ন্যাশনাল কনফারেন্সও মামলা করে। আদালতে যান প্রাক্তন আমলা শাহ ফয়সল, ছাত্র নেত্রী শেহলা রশিদ, বেশ কয়েক জন প্রাক্তন প্রশাসনিক ও সামরিক কর্তা, প্রাক্তন প্রতিরক্ষা কর্তা-সহ অনেকে। আজ সরকারের যুক্তি ছিল অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সলিসিটর জেনারেল দু’জনেই যখন আদালতে উপস্থিত রয়েছেন, তখন আর নোটিস পাঠানোর দরকার নেই। কিন্তু এই যুক্তি মানেননি বিচারপতিরা।
১৭ নভেম্বর অবসর নেবেন প্রধান বিচারপতি গগৈ। মাঝখানে রয়েছে পুজো ও দীপাবলির ছুটি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে অযোধ্যা মামলার মতো গুরুত্বপূর্ণ শুনানি চলছে। ফলে এই সীমিত সময়ের মধ্যে ৩৭০ মামলার সাংবিধানিক বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি নিজেকে রাখবেন কি না, জল্পনা শুরু হয়েছে তা নিয়ে।