ছবি: রয়টার্স।
পরিস্থিতি আপাত ভাবে স্বাভাবিক বলে দাবি করা হলেও, আজও উপত্যকার এক তৃতীয়াংশ থানা এলাকায় যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি রাখতে বাধ্য হল স্থানীয় প্রশাসন। উপত্যকায় ২২টির মধ্যে এখনও ১০টি জেলা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। সেই এলাকাগুলিতে দৈনন্দিন কাজকর্ম যে বন্ধ রয়েছে তা আজ মেনে নিয়েছে প্রশাসন। তবে গত কাল প্রাইমারি স্কুল খোলার পরে আগামিকাল থেকে জেলার বিভিন্ন অংশে মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলি খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আদৌ স্কুলগুলিতে পড়ুয়া আসবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সব শিবিরেই। অন্য দিকে আজ পুঞ্চে পাক হামলায় নিহত হয়েছেন এক সেনা।
সোমবার থেকেই উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তে কার্ফু তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। সকালের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও, বেলা গড়ালেই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাথর ছোড়ার ঘটনা সামনে আসতে শুরু করে। ঝুঁকি না নিয়ে কাল দুপুরের পর থেকে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আজ অবশ্য পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রশাসন। জম্মু-কাশ্মীরের যোজনা কমিশনের সচিব তথা সরকারি মুখপাত্র রোহিত কানসাল বলেন, ‘‘রাজ্যের ১৯৭টি থানার মধ্যে ১৩৬টি থানা এলাকায় স্থানীয়দের স্বাভাবিক গতিবিধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। আন্তঃরাজ্য গণপরিবহণ চালু হয়েছে। জাতীয় সড়কও চালু ছিল। বিমানবন্দরে স্বাভাবিক ভাবে বিমান ওঠানামা করেছে। ১২টি জেলায় স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে।’’
অন্য দিকে আজ পুঞ্চের মেন্ধর ও কৃষ্ণ ঘাটি সেক্টরে হামলা চালায় পাক সেনা। তাতে রবিরঞ্জন কুমার সিংহ নামে এক সেনা নিহত হন। ভারতের পাল্টা হামলায় কয়েক জন পাক সেনা নিহত হয়েছেন বলে দাবি ভারতীয় সেনার। পাক সেনার পাল্টা দাবি, টাট্টা পানি সেক্টরে ভারতই সংঘর্ষবিরতি ভেঙে হামলা চালায়। তাতে এক সাত বছরের বালক-সহ তিন জন স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হন। পাক সেনার পাল্টা হামলায় এক অফিসার-সহ ৬ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন।
এ দিকে কেন্দ্রের জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ ক্ষমতা রদ ও রাজনৈতিক নেতাদের গৃহবন্দি করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী বৃহস্পতিবার দিল্লির যন্তর-মন্তরে ধর্নায় বসতে চলেছেন ডিএমকে নেতারা। ওই বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের পক্ষ থেকে ওই বিক্ষোভে প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। ওই দুই এলাকায় সরকারি দফতর থেকে অর্থ ও কর্মী বণ্টন সুনিশ্চিত করতে আজ তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রথম কমিটির প্রধান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপালের পরামর্শদাতা কে কে শর্মাকে। কমিটির সদস্য করা হয়েছে প্রতিটি সরকারি দফতরের প্রধান সচিবদের। মূলত দু’টি কেন্দ্রশাসিত এলাকায় ক্ষমতা হস্তান্তর, দফতর বণ্টন যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয় তা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওই কমিটিকে। এ ছাড়া আর্থিক বিষয়ক ক্ষমতা হস্তান্তর ও দু’টি এলাকায় কর্মীদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখার জন্য তৈরি হয়েছে দু’টি আলাদা কমিটি। আর্থিক কমিটির দায়িত্বে রয়েছেন অর্থ দফতরের ফিনান্সিয়াল কমিশনার। দুটি অঞ্চলে কোন সূত্র মেনে অর্থ বণ্টন হবে তা নির্ধারণ করাই হবে ওই কমিটির কাজ। সরকারি কর্মীদের কাকে কোথায় নিয়োগ করা হবে তা দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির দায়িত্বে থাকছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। তাঁকে সাহায্য করবেন কর্মিবৃন্দ দফতরের কর্তারা।