বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের ভবন ফিরে পেতে স্থানীয় বাঙালিদের প্রতিবাদ। —নিজস্ব চিত্র
সাবেক উদ্যান-শহর থেকে দেশের ‘সিলিকন ভ্যালিতে’ উত্তরণের যাত্রায় বেঙ্গালুরুর পরতে পরতে মিশে রয়েছেন বাঙালিরা। বাংলার বাইরে বাঙালিদের 'সেকেন্ড হোম'ও ইদানীং কেউ কেউ বলে থাকেন কর্নাটকের রাজধানীকে। সাত লক্ষেরও বেশি বাঙালির সেই শহরে সাবেক ‘বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন’-এর এখন কার্যত বাস্তুহারা হওয়ার দশা।
আলসুর হ্রদের কাছে শহরের কেন্দ্রে আসেয়ি রোডে বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের দু'টি ভবন নিয়েই চলছে টানাপড়েন। এক বছরের বেশি, তা কার্যত স্থানীয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে'। দু'টি ভবন তথা প্রেক্ষাগৃহ, গ্রন্থাগার সব লিজপ্রাপ্ত জমিতে তাঁরা নিজেরাই তৈরি করেছিলেন বলে জানাচ্ছেন অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বহু বছর জড়িত বেঙ্গালুরুর বিশিষ্ট বাঙালিরা। ২০০৭ ও ২০১২তে ৩০ বছরের লিজের মেয়াদ পার হতেই সঙ্কটের শুরু। অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, দীর্ঘদিন লিজের নতুন দর জানায়নি প্রশাসন। হঠাৎ একটি ভবনের লিজের টাকা এক লাফে বছরে ১৩৯০ টাকা থেকে সাড়ে ১৭ লক্ষ টাকা হয়েছে। আর একটির ৪৩০০ টাকা থেকে ১০ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। নতুন লিজের দর ধার্য হওয়ার পরে বকেয়াসহ পুরো টাকার দাবি জানায় বৃহৎ বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকে (বিবিএমপি)। বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বলা হয়, তাদেরটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, বাড়িগুলি বাণিজ্যিক ভবন নয়। সুতরাং বাণিজ্যিক ভবনের হারে টাকা ধার্য করা হলে মুশকিল। এই টানাপড়েনে বাড়িটি কার্যত নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে্ স্থানীয় পুরপ্রশাসন। শুধু অফিসের অংশ, কর্মচারীদের থাকার জায়গা খোলা। কর্নাটক সরকার নিযুক্ত প্রশাসকই এখন অ্যাসোসিয়েশনে ‘নিয়ন্ত্রক’ ।
‘সেভ বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন’ মঞ্চ গড়ে স্থানীয় বাঙালিরা এ বার মাঠে নেমেছেন। প্রতিবাদ সভাও হয়েছে। এই উদ্যোগের আহ্বায়ক অচিন্ত্যলাল রায়ের কথায়, ‘‘লিজের এত টাকা দাবির কোনও মাথামুন্ডু নেই। ফরাসিদের আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ লিজ বাবদ ১৬০০০ বর্গফুটের জমিতে ৩০ হাজার টাকা দেয়। আমাদের কাছে দু'টি বাড়ি মিলিয়ে ১০ হাজার বর্গ ফুটে ২৮ লক্ষের বেশি চাওয়া হচ্ছে।’’ কক্সটাউনে বিবিএমপি-র অ্যাসিস্ট্যান্ট রেভিনিউ অফিসার আদিনাথ চৌগলে বলেন, ‘‘শুধু বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন নয়, বেঙ্গালুরুর ৩০০ টা লিজ দেওয়া জমির চুক্তিই সংশোধন চলছে। পুর কমিশনার বিষয়টি দেখছেন।’’