—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কাঠুয়া জেলার হিরানগরীর গ্রামে গুলি চালানোর আগে গ্রামবাসীদের দরজায় দরজায় ঘুরে জল খেতে চেয়েছিল দুই জঙ্গি। তবে সতর্ক গ্রামবাসীরা তাঁদের মুখের উপরে দরজা বন্ধ করে দেন। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই এক বাসিন্দার বাড়িতে ঢুকে গুলি চালায় ওই জঙ্গিরা। কাঠুয়ায় জঙ্গি হামলার পুরো ঘটনার বিবরণ দেওয়ার সময় তেমনটাই জানাল কাশ্মীর পুলিশ।
জম্মু জ়োনের এডিজিপি আনন্দ জৈন বলেন, ‘‘জঙ্গিরা বেশ কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে জল চেয়েছিল। কিন্তু তাদের দেখে সন্দেহ হয় গ্রামবাসীদের। জঙ্গিদের মুখের উপরেই তাঁরা দরজা বন্ধ করে দেন। গ্রামের মধ্যে খবর ছড়়িয়ে পড়তেই হইচই পড়ে। জঙ্গিরা আতঙ্কিত হয়ে আকাশের দিকে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। এক গ্রামবাসীও গুলিবিদ্ধ হন।’’
মঙ্গলবার রাতে কাঠুয়া জেলার হিরানগরীর সাইদা সুখল গ্রামে ঢুকে পড়ে দু’জন জঙ্গি। এক গ্রামবাসীর বাড়িতে ঢুকে গুলি চালায় তারা। সেই ঘটনায় এক জন গ্রামবাসী আহত হন। এর পরেই ওই দুই জঙ্গিকে খুঁজে বার করতে তল্লাশি অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী। এদের মধ্যে এক জঙ্গিকে মঙ্গলবার রাতেই নিকেশ করা হয়। জওয়ানদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়ার চেষ্টা করছিল ওই জঙ্গি। তখনই বাহিনীর গুলি লাগে তার গায়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। অন্য জঙ্গিকে খুঁজে বার করতে সারা রাত ধরে তল্লাশি চলে। এর পর বুধবার বেলার দিকে বাহিনীর গুলিতে মারা যায় দ্বিতীয় জনও। এই অভিযানে জঙ্গিদের চালানো গুলিতে আধাসামরিক বাহিনীর এক জওয়ানও নিহত হয়েছেন।
আনন্দ জানিয়েছেন, ওমকার নাথ নামে যে গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর স্ত্রীও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তবে এই ঘটনায় গ্রামবাসীদের কেউ মারা যাননি বলেও তিনি জানিয়েছেন। এই হামলার নেপথ্যে পাক-যোগের সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না আনন্দ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার গভীর রাতে ডোডায় একটি সেনাঘাঁটিতেও হামলা চালায় জঙ্গিরা। সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে গুলির লড়াই চলে। এই হামলার ঘটনায় দু’জন সেনাকর্মী আহত হয়েছেন।
গত তিন দিনে এই জম্মু ও কাশ্মীরে তৃতীয় জঙ্গি হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে এল। দিন দুয়েক আগে জম্মুর শিবখড়ি মন্দির থেকে কাটরায় বৈষ্ণো দেবীর মন্দিরের উদ্দেশে যাওয়া তীর্থ যাত্রীবোঝাই বাসে হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলার জেরে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গড়িয়ে খাদে পড়ে যায়। মৃত্যু হয় ১০ জন পুণ্যার্থীর। পর পর জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় অস্বস্তিতে প্রশাসন। রবিবারের ঘটনায় ইতিমধ্যেই জাতীয় তদন্তকারী দল (এনআইএ) তদন্তভার গ্রহণ করেছে। তার মধ্যেই একই রাতে ঘটে গেল দুই পৃথক জঙ্গি হামলার ঘটনা।