অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র ।
চিকিৎসার জন্য সংগঠন থেকে ‘ছোট বিরতি’ নিচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সমাজমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে সেই কথা জানিয়েছেন খোদ অভিষেকই। পাশাপাশিই অভিষেক লিখেছেন, ‘কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতে’ বাংলার মানুষ তাঁদের আবাসের অধিকার থেকে বঞ্চিত। তৃণমূল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ডিসেম্বরের মধ্যে তা পূরণ করা হবে। তা যাতে নিশ্চিত হয়, সে ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি অনুরোধও করেছেন বলে পোস্টে উল্লেখ করেছেন অভিষেক। রাজ্য সরকার তার দায়িত্ব পালন করবে বলেও নিজের বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের সেনাপতি।
অভিষেক লিখেছেন, ‘‘চিকিৎসার জন্য আমি সংগঠন থেকে সংক্ষিপ্ত বিরতি নেব। এই সময় সাধারণ মানুষের চাহিদা কী, তা আরও ভাল ভাবে অনুধাবনের সুযোগ আমার কাছে রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, রাজ্য সরকার দ্রুত এবং ভাল ভাবে মানুষের সমস্যার সমাধান করবে এবং মানুষ যাতে ন্যায়বিচার পায় তা নিশ্চিত করবে।’’
তিনি যে ‘ছোট বিরতি’ নিচ্ছেন, সেই সময়ে তিনি কী করবেন, তা-ও জানিয়েছেন তৃণমূলের সেনাপতি। অভিষেক লিখেছেন, এই ‘ছুটি’ জনগণের সুবিধা-অসুবিধা এবং চাহিদার কথা আরও ভাল ভাবে বোঝার জন্য কাজে লাগাবেন তিনি। রাজ্য সরকার বাংলার সাধারণ মানুষের জন্য তাদের কাজ জারি রাখবে এবং মানুষের চাহিদা পূরণ করবে বলেও আশা ব্যক্ত করেছেন অভিষেক।
গত বছর এই সময়েই তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ যাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন অভিষেক। ৫১ দিনের সেই যাত্রায় কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ— সাড়ে ৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ যাত্রা করেছিলেন তিনি। রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ১৩৫টি জনসভা, ৬০টি বিশেষ অধিবেশন, ১২৫টি রোড-শো, ৩৩টি রাতের অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে অভিষেকের ‘নবজোয়ার’ যাত্রা তৃণমূলের সংগঠনেও মন্থন তৈরি করেছিল। বিশেষত, গোপন ব্যালটে ভোট নিয়ে প্রার্থী চয়নের যে মডেল অভিষেক দেখিয়েছিলেন, তা তৃণমূলে অভিনবই ছিল। সেই সময়ের কথা মনে করে অভিষেক লিখেছেন, ‘‘গত বছর এই সময়েই আমি নবজোয়ার যাত্রায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে মানুষ কী সমস্যার এবং চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন তা বোঝার চেষ্টা করেছি। ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি এবং ১০০ দিনের কাজে টাকা কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ায়, তা আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।’’
‘কেন্দ্রের বঞ্চনা’ নিয়ে বাংলার আন্দোলনকে দিল্লি পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন অভিষেক। ইতিমধ্যেই লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যের ৫৯ লক্ষ শ্রমিককে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি মিটিয়েছে রাজ্য সরকার। অভিষেক এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভার প্রচারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আবাস যোজনার বাড়ির টাকাও দেবে রাজ্য সরকার। তা যাতে নিশ্চিত হয়, বুধবারের পোস্টে তা-ও উল্লেখ করেছেন তৃণমূলের সেনাপতি।
অভিষেকের চোখে সমস্যা রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাঁকে চিকিৎসা করাতে যেতে হয় বিদেশে। বুধবারের পোস্টে অবশ্য চোখের চিকিৎসার বিষয়টি নির্দিষ্ট করে লেখেননি অভিষেক। তবে তৃণমূলে অভিষেক-ঘনিষ্ঠদের অনেকের বক্তব্য, তিনি রুটিন চিকিৎসা করাতেই বাইরে যেতে পারেন।