বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে প্রতিটি ধর্মের মানুষ শান্তি এবং সম্প্রীতির আবহে বসবাস করেন বলে দাবি করলেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর আসন্ন ভারত সফর প্রসঙ্গে সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসিনা জানান, দেশে সংখ্যালঘুদের উপর কোনও অত্যাচার ঘটলে তাঁর দল এবং প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ করে।
সাম্প্রতিক অতীতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের ঘটনা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে হাসিনাকে প্রশ্ন করা হয়। হাসিনা জানান, প্রতিটি দেশেরই এই ব্যাপারে ‘মহানুভবতা’ দেখানো উচিত। নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মুজিব-কন্যা বলেন, “বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এখানে বহু ধর্মের মানুষ বাস করেন। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকলেও একটা দু’টো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে যায়।” তবে ‘অনভিপ্রেত’ কিছু ঘটলে তাঁর সরকার এবং দল তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ করে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী।
তবে হাসিনা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, আর পাঁচটা দেশের মতোই বাংলাদেশেও ধর্মীয় উগ্রপন্থা রয়েছে। ভারতেও এই সমস্যা আছে বলে দাবি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, তাঁর সরকার ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে বিন্দুমাত্র আপস করবে না।
সে দেশের সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে হাসিনা বলেন, “আমরা যখন থেকে ক্ষমতায় আছি, তখন থেকে দেশের সংখ্যালঘুদের বলেছি যে, আপনারা দেশের নাগরিক। আপনারা নিজেদের দেশেই বসবাস করছেন। নিজেদের দুর্বল বলে মনে করার কোনও কারণ নেই।”
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক অতীতে বাংলাদেশে বারংবার সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। চলতি বছরের ১৫ জুলাই সে দেশের নড়াইলের সাহাপাড়া অঞ্চলে এক দল মানুষ হিন্দুদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেন। এই প্রসঙ্গে অভিযুক্তদের যুক্তি ছিল, তাঁদের এক হিন্দু প্রতিবেশী ফেসবুকে ইসলাম ধর্মের অবমাননা করেছেন। বাংলাদেশের সর্বশেষ জনগণনা অনুযায়ী সে দেশে হিন্দুদের সংখ্যা ১৩.৫ শতাংশ থেকে কমে ৮.৫ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। হিন্দু সংগঠনগুলি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে।
৫ সেপ্টেম্বর চার দিনের ভারত সফরে দিল্লি আসছেন হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে তাঁর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা। ভারত সফরের আগে হাসিনার ধর্মনিরপেক্ষতা সংক্রান্ত বক্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহলের একাংশ।