নিহত নেতা বাবা সিদ্দিকি। — ফাইল চিত্র।
দেশি-বিদেশি বন্দুক নিয়ে আটঘাট বেঁধেই এসেছিল সিদ্দিকি খুনে অভিযুক্তেরা। সঙ্গে ছিল ৬৫ রাউন্ড কার্তুজও। কাজের সুবিধার্থে কেনা হয়েছিল পুরনো স্কুটার। এমনই নানা তথ্য উঠে এল পুলিশি জেরায়।
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা (অজিত পওয়ার গোষ্ঠী) বাবা সিদ্দিকিকে খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুই আততায়ী-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। জেরায় অভিযুক্তরা পরিকল্পনার কথা বিস্তারিত জানিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
ঘটনায় প্রথম যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়, তাঁদের নাম গুরমেল সিংহ এবং ধর্মরাজ কাশ্যপ। দু’জনেরই বয়স ২০-র কোঠায়। এক জন উত্তরপ্রদেশ, অন্য জন হরিয়ানার বাসিন্দা। জেরায় তারা জানিয়েছে, দেশি-বিদেশি একাধিক বন্দুক নিয়ে আটঘাট বেঁধেই এসেছিল সিদ্দিকি খুনে অভিযুক্তেরা। সঙ্গে ছিল একটি স্থানীয় ভাবে তৈরি দেশি বন্দুক এবং একটি অস্ট্রিয়ান পিস্তল। অপারেশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত গুলির জোগানে ঘাটতি এড়াতে ছিল ৬৫ রাউন্ড কার্তুজও। ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে একটি কালো ব্যাগ মিলেছে। তাতে ৩০ রাউন্ড গুলি-সহ তুর্কিতে তৈরি একটি ৭.৬২ বোরের পিস্তল মিলেছে। ওই ব্যাগ থেকে দু’টি আধার কার্ডও পেয়েছে পুলিশ— যার একটি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত শিবকুমার গৌতমের। অন্যটিতে নাম রয়েছে জনৈক সুমিত কুমারের। তবে দু’টি পরিচয়পত্রেই রয়েছে শিবকুমারের ছবি।
ইউটিউব ভিডিয়ো দেখে বন্দুক চালানো শিখেছিল অভিযু্ক্তেরা। ইউটিউবের সাহায্য নিয়ে ম্যাগাজ়িন ছাড়াই নিয়মিত মহড়া দেয় তারা। সিদ্দিকি ও তাঁর পুত্র জিশানকে হত্যায় তাদের সুপারি দেওয়া হয়। খুনের দিন কয়েক আগেই দু’জনে হাতে পেয়ে গিয়েছিল আগাম এক লক্ষ টাকা। পেয়েছিল আগ্নেয়াস্ত্রও। খুনের মহড়া দেওয়ার জন্য কুরলায় বাড়ি ভাড়াও নেয় গুরমেল ও ধর্মরাজ। ঘটনাস্থল একাধিক বার ‘রেকি’ করতে যান দু’জনে। সুবিধার জন্য ৩২ হাজার টাকা দিয়ে একটি পুরনো স্কুটারও কেনা হয়েছিল। তবে, অটোয় চড়েই ‘অপারেশন’ সারতে যায় তিন আততায়ী।
শনিবার রাতে নির্মল নগরে নিজের অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় এনসিপি (অজিত) নেতা সিদ্দিকিকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি চলে। রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় তাঁর। ৯.৯ এমএম পিস্তল থেকে ছোড়া হয়েছিল গুলি। মুম্বই পুলিশের দাবি, সিদ্দিকি খুনে গ্যাংস্টার লরেন্স বিশ্নোইয়ের যোগ রয়েছে। জল্পনা, এই খুনের জন্য মোট ২৫ লক্ষ টাকার বরাত পেয়েছিল বিশ্নোই গ্যাং।