পার্থ চট্টোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলায় এ বার ইডির কাছে হলফনামা চাইল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি সিটি রবি কুমার এবং বিচারপতি উজ্জল ভূয়ানের বেঞ্চ কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাছে হলফনামা চায়। এক সপ্তাহ পরে শীর্ষ আদালতে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালে পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। ওই মামলায় জামিন চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। সেই শুনানিতেই বৃহস্পতিবার ইডির আইনজীবী এসভি রাজু এই জামিনের বিরোধিতা করে বক্তব্য জানাতে চান। সেই সঙ্গে তিনি এও দাবি করেন, এটি একটি বড় দুর্নীতির মামলা। এর পরেই ইডির কাছে হলফনামা চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
২০২২ সালের ২৩ জুলাই পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার আগে তাঁর নাকতলার বাড়িতে চলেছিল দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে একই সময়ে হানা দিয়েছিল ইডি। টালিগঞ্জের ‘ডায়মন্ড সিটি’ আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। পরে অর্পিতার আরও একটি ফ্ল্যাট থেকে বিপুল নগদ উদ্ধার হয়। মোট উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ ছিল ৪৯ কোটি ৮০ লাখ।
বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি রয়েছেন পার্থ। ইডির পর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইও অভিযোগ আনে। দুই মামলাই এখনও বিচারাধীন। ইতিমধ্যে বহু বার জামিনের আবেদনও করেছেন পার্থ। কিন্তু তা মঞ্জুর হয়নি। এর আগে ইডির মামলায় জামিন চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ। জামিনের বিরোধিতা করে ইডি। গত এপ্রিলের ওই শুনানি শেষে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ পার্থের জামিনের আবেদন খারিজ করেন। সম্প্রতি সিবিআইয়ের দায়ের করা নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও পার্থের জামিনের আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। রায়দান স্থগিত রয়েছে। হাই কোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, পুজোর পরে এই মামলার রায়দান হতে পারে। একই মামলায় পার্থ ছাড়াও গ্রেফতার হয়েছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়-সহ শিক্ষা দফতরের একাধিক আধিকারিক। তাঁদের জামিনের মামলাতেও শুনানি হয়েছে হাই কোর্টে। পুজোর ছুটির পর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আদালত খুললে পার্থদের মামলায় রায় দিতে পারে হাই কোর্ট।