ফাইল চিত্র।
অযোধ্যার জমি কার দখলে যাবে, তার ফয়সালা হয়ে গেল। তার পরেই প্রশ্ন উঠে গেল অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায় কী হবে, তা নিয়ে।
১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনায় লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, উমা ভারতীর মতো বিজেপি-আরএসএস নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে লখনউয়ে, সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। আজ সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রামমন্দির তৈরির পক্ষে রায় দিয়েছে। একই সঙ্গে বাবরি ভাঙার ঘটনাকে ‘আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে আখ্যা দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এ কথাও বলেছে, অযোধ্যার জমিতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলেছিল আদালত। তা সত্ত্বেও বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছিল।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসে কারা দোষী, তাদের কী শাস্তি হবে, তা ঠিক করতে গত ২৭ বছর ধরে মামলা চলছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০২০-র জানুয়ারির মধ্যে শুনানি শেষ করে এপ্রিলের মধ্যে ওই মামলার রায় ঘোষণা করতে হবে। তার জন্য সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদবের চাকরির মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে, বাবরি মসজিদ ভাঙাকে আইনত অপরাধ বলে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে। তা হলে কি আডবাণী, জোশী, উমাদের অপরাধী সাব্যস্ত করবে বিশেষ আদালত? বাবরি মসজিদ ধ্বংসের তদন্তে তৈরি লিবেরহান কমিশন তার রিপোর্টে বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবারের নেতাদেরই দোষী ঠাউরেছিল। উল্টো দিকের প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্ট তো বাবরি মসজিদের জমিতেই রামমন্দির তৈরির কথা বলেছে। আডবাণী, জোশীরা সেই চেষ্টাই করেছিলেন। তা হলে ওই কাজ অপরাধ হয় কী করে?
আজ আডবাণী বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে তাঁর অবস্থান স্বীকৃতি পেল। তিনি ঠিক এটাই চেয়েছিলেন। আর ১৯৯২-র ৬ ডিসেম্বরের ঘটনা নিয়ে উমা ভারতীর মন্তব্য, ‘‘আমি ওই ঘটনা নিয়ে কোনও দিনই ক্ষমাপ্রার্থী ছিলাম না। এখনও নই। আদালত যা রায় দেবে, আমি মাথা পেতে নেব।’’
লখনউয়ের আদালতে এখন তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এই মামলায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিঙ্ঘল, গিরিরাজ কিশোরের মতো অনেক অভিযুক্ত মারা গিয়েছেন। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহও লিবেরহান কমিশন বলেছিল, কল্যাণ সিংহ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কোর্টকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, করসেবকদের হাতে বাবরি মসজিদের কোনও ক্ষতি হতে দেওয়া হবে না। কিন্তু রাজ্যের পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে সেটাই হতে দিয়েছিল।