—প্রতীকী চিত্র।
বিকেল ৪টে পর্যন্ত পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জয় পাওয়া এগিয়ে থাকার নিরিখে জ়েডপিএমের দখলে ২৭টি আসন। এমএনএফের দখলে ১০টি আসন, বিজেপির দখলে ২টি আসন এবং কংগ্রেসের দখলে মাত্র একটি আসন।
দলের জয় স্পষ্ট হতেই মুখ খুললেন জ়েডপিএম নেতা তথা মিজ়োরামের সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী লালডুহোমা। তিনি জানালেন যে, আগামিকাল কিংবা তার পরে কোনও দিন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের আর্জি জানাবেন তিনি। চলতি মাসেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পর মসনদ তো গেলই, নিজেও হারলেন এমএনএফ নেতা তথা মিজ়োরামের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী জ়োরামথাঙ্গা। আইজল পূর্ব ১ কেন্দ্রে জ়েডপিএম প্রার্থীর কাছে ২,১০১ ভোটে পরাজিত হয়েছেন তিনি।
মিজ়োরামেও পালাবদল! সরকার গঠনের পথে জ়েডপিএম। অনেকটাই পিছিয়ে বিদায়ী শাসকদল এমএনএফ। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যেও ভোট-বিপর্যয়ের মুখে কংগ্রেস। ২০১৮ সালে মিজ়োরামে ক্ষমতা হারিয়েছিল কংগ্রেস। সে বার ৪টি আসন পেয়েছিল তারা। আপাতত কংগ্রেস একটি আসনে এগিয়ে রয়েছে। বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ২টি আসনে।
সকালে জোর টক্কর চলছিল জ়েডপিএম এবং এমএনএফ-এর মধ্যে। বেলা গড়াতেই ক্রমশ আসনসংখ্যা বাড়তে লাগল জ়েডপিএম-এর। এখনও পর্যন্ত ভোটের যে ফল জানা গিয়েছে, তাতে জাদুসংখ্যা ছুঁয়ে ফেলেছে লালডুহোমার দল। মাত্র একটি আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। তিনটি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।
মিজ়োরামে থমিক গণনায় এগিয়ে গিয়েছিল জ়েডপিএম। কিন্তু বেলা গড়াতে লড়াইয়ে ফেরার ইঙ্গিত দিল শাসকদল এমএনএফ-ও। আপাতত ১১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে এমএনএফ। ১৫টি আসনে এগিয়ে রয়েছে জ়েডপিএম। কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে দশটি আসনে। বিজেপি এগিয়ে রয়েছে দু’টি আসনে।
৪০ আসনের মিজ়োরাম বিধানসভায় জাদুসংখ্যা ২১। প্রাথমিক গণনায় ২৩টি আসনে এগিয়ে জ়েডপিএম। এমএনএফ এগিয়ে ১০টি আসনে। কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ৬টি আসনে। বিজেপি এগিয়ে রয়েছে মাত্র একটি আসনে।
মিজ়োরামে শুরুতেই এগিয়ে গেল লালডুহোমার দল জ়েডপিএম। এখনও পর্যন্ত ৪০ আসনের বিধানসভায় ৩৩টি আসনে গণনা শুরু হয়েছে। তার মধ্যে ১৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে জ়েডপিএম। রাজ্যের বর্তমান শাসক দল এমএনএফ এগিয়ে রয়েছে ১১টি আসনে। কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ৫টি আসনে। এখনও পর্যন্ত বিজেপি কোনও আসনে এগিয়ে নেই।
৪০টি আসনের মিজ়োরাম বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদুসংখ্যা ২১। যুযুধান প্রধান তিন দল শাসক মিজ়ো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ), প্রধান বিরোধী জ়োরাম পিপলস্ মুভমেন্ট (জেডপিএম) এবং প্রাক্তন শাসক দল কংগ্রেস সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল। বিজেপি লড়েছিল ২৩টি আসনে। গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন এমএনএফ প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা (আইজল পূর্ব-১), উপমুখ্যমন্ত্রী তাওনলুইয়া (তুইচাং), বিরোধী দলনেতা লালডুহোমা (সেরচিপ), প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি লালসাওতা (আইজ়ল পশ্চিম-২)।
নির্বাচনী ইতিহাস বলছে, প্রতি দশকে মিজ়োরামে সরকার পাল্টায়। সেই ধারা মেনেই ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সরকার পাল্টে দিয়েছিলেন মিজ়োরা। ক্ষমতায় এসেছিল মিজ়ো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ)। অর্থাৎ, ভোটের ধারা মেনে এ বারও তাদের ক্ষমতায় থাকার কথা। ২০১৮-র ওই ভোটে এমএনএফ মিজ়োরামের ৪০টি আসনের মধ্যে জিতেছিল ২৭টিতে। তবে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে একদা ইন্দিরা গান্ধীর দেহরক্ষী দলের নেতা, প্রাক্তন আইপিএস লালডুহোমার সদ্যগঠিত জ়োরাম পিপলস্ মুভমেন্ট (জ়েডপিএম) শক্তিবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে। গত বার এই দলটি আটটি আসন পেয়েছিল। কোনও কোনও সমীক্ষায় দাবি করা হচ্ছে, এ বার লালডুহোমার দলই মিজ়োরামে ক্ষমতায় আসতে চলেছে। সে ক্ষেত্রে এক দশক অর্থাৎ দশ বছর নয়, পাঁচ বছরের ব্যবধানেই সরকার বদল হবে এই রাজ্যে।
স্থানীয় সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলগুলির দাবি মেনে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, ভোটগণনা রবিবারের পরিবর্তে সোমবার হবে। চার রাজ্যের মধ্যে তিনটি রাজ্যে ‘গেরুয়া ঝড়’ হলেও ‘মিজ়োরাম-কাঁটা’ কিন্তু এখনও বিঁধে রয়েছে বিজেপির গলায়। শাসকদল এমএনএফ (মিজ়ো ন্যাশনাল ফ্রন্ট) ২০১৬ সাল থেকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ‘নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স’ (নেডা)-র এর সদস্য। কিন্তু সম্প্রতি সেই বিজেপির বিরুদ্ধেই সুর চড়িয়েছে এমএনএফ। তার কারণ মণিপুরের সাম্প্রতিক হিংসা।
বাস্তব বলছে, বিধানসভা নির্বাচনে ৪০ আসনের ফলাফল যা-ই হোক, একটি লোকসভা আসনের মিজ়োরাম নিয়ে বিজেপি বা কংগ্রেস, কারও আর সে ভাবে কোনও মাথাব্যথা নেই। তবে অনেকের মতে, মিজ়োরাম বিধানসভার ভোটের ফলাফল প্রভাব ফেলতে পারে উত্তর-পূর্বের বাকি রাজ্যে। সে ক্ষেত্রে ধাক্কা খেতে পারে অমিত শাহের ‘কংগ্রেসমুক্ত উত্তর-পূর্ব ভারত’-এর লক্ষ্য।
রবিবার চার রাজ্যে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরে যা পরিস্থিতি, তাতে আরও চওড়া হতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাসি। কারণ মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানা, রাজস্থানের মধ্যে তিন রাজ্যেই সরকার গড়তে চলেছে বিজেপি। তেলঙ্গানা মুখরক্ষা করেছে কংগ্রেসের। আর মিজ়োরাম? সোমবার সে রাজ্যের ভোটগণনা। তা কতটা প্রভাব ফেলবে দেশের রাজনীতিতে? কতটা প্রভাব ফেলবে আসন্ন লোকসভায়?