হিমন্তের টুইট উল্লেখ করে রাজ্যকে ডিএ নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র ।
মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) বাড়ানোর দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের সমান ডিএ বাড়ানোর দাবি নিয়ে পথে নেমেছেন সরকারি কর্মচারীরা। এই আবহেই সরকারি কর্মীদের প্রাপ্ত ডিএ-র হার ৪ শতাংশ বা়ড়িয়ে কেন্দ্রের সমান করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। একটি টুইট করে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের সরকার তার কর্মচারীদের প্রতি যত্নশীল। আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, রাজ্যের বেতনভোগী এবং পেনশনভোগীদের এখন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ ডিএ দেওয়া হবে। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারির হিসাবে তাঁরা এই নতুন হারে ডিএ পাবেন। বর্তমানে নতুন ডিএ-র হার ৪২ শতাংশ।’’
ঘটনাচক্রে হিমন্ত তখন এই সিদ্ধান্ত নিলেন, যখন প্রতিবেশী বাংলায় ডিএ-র দাবি তুলে প্রতিবাদে নেমেছেন সরকারি কর্মচারীরা। হিমন্তের টুইটকে অস্ত্র করে মাঠে নেমে পড়েছে বাংলার গেরুয়া শিবিরও। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যেই হিমন্তের টুইট উল্লেখ করে অন্য একটি টুইটে লেখেন, ‘‘দুঃখজনক যে, আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার সরকারি কর্মীদের ‘চোর এবং ডাকাত’ বলে সম্বোধন করে। অন্য দিকে, আমি অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে গেরুয়া অভিনন্দন জানাচ্ছি। যিনি সরকারি কর্মচারীদের ডিএ ৪ শতাংশ হারে বাড়িয়ে তা কেন্দ্রের দেওয়া ডিএ-র সমান করে দিয়েছেন। এগিয়ে বাংলা, না বঞ্চিত বাংলা?’’
সম্প্রতি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আর্থিক বঞ্চনা এবং গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ করার অভিযোগ এনে রেড রোডে মঞ্চ তৈরি করে ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই মঞ্চ থেকেই ডিএ-র দাবিতে বিক্ষোভরত রাজ্য সরকারি কর্মীদের ‘চোর-ডাকাত’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এরা সব চিরকুটে চাকরি পেয়েছিল। সেই চোর-ডাকাতগুলোই গিয়ে বসে আছে ডিএ-র মঞ্চে।’’ মু্খ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে শোরগোল পড়ে। বিরোধী দলগুলি একসুরে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রীকে। মমতার এই মন্তব্য ‘আপত্তিকর’ বলেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
তবে মনে করা হচ্ছে সেই শোরগোল এখনই শান্ত হতে দিতে চাইছে না রাজ্য বিজেপি। আর সেই কারণেই হিমন্তের টুইট উল্লেখ করে রাজ্যকে ডিএ নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন শুভেন্দু।
বর্তমানে ৬ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা। কেন্দ্র ডিএ দিচ্ছে ৪২ শতাংশ হারে। রাজ্যের সরকারি কর্মীদের দাবি অনুযায়ী, ডিএ-র ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। এই বকেয়া ডিএ-র দাবিতে শহিদ মিনারের কাছে দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ।