বন্যা পরিস্থিতিতে অসমের বিস্তীর্ণ অংশ জলের তলায়। ছবি পার্থ শীল।
যে দিকে চোখ যায়, শুধুই জল আর জল! সেই জলে ভাসছে প্যাকেটে মোড়া মৃতদেহ। এমন ভয়ঙ্কর দৃশ্য ধরা পড়েছে বানভাসি শিলচরে।
বন্যা পরিস্থিতিতে অসমের এই এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ জলের তলায়। জাতীয় সড়ক সংলগ্ন এলাকার জলে প্যাকেটে মোড়া মৃতদেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে। শেষকৃত্যের জায়গা না থাকায় ‘বাধ্য হয়েই’ পরিজনকে এই ভাবেই শেষ বিদায় জানিয়েছেন মৃতের আত্মীয়রা।
বৃহস্পতিবার থেকে প্লাবনের জলে মৃতদেহ ভাসছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, অন্যত্র ব্যস্ত থাকায় ওই এলাকায় পৌঁছতে পারেনি উদ্ধারকারী দল। তাই দেহ উদ্ধারও করা হয়নি। বন্যা পরিস্থিতির জেরে গত কয়েক দিন ধরেই শিলচরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। জলের তলায় ডুবে গিয়েছে শ্মশানও। মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করতে পারছে না পরিবার। সে কারণেই মৃতদেহ প্যাকেটে মুড়ে জলে ভাসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাসিন্দারা, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, শিলচরের অনেক বাসিন্দা নিজেদের আপনজনের মৃতদেহ উদ্ধারকারী দলের হাতেই তুলে দিচ্ছেন। মৃতদেহের চাপ কমাতে কল্যাণী হাসপাতালের শ্মশান জনসাধারণের জন্য খুলে দিয়েছেন চিকিৎসক লক্ষ্মণ দাস। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, গুয়াহাটি থেকে শিলচর শহরে পানীয় জলের বোতল পৌঁছে দেবে ভারতীয় বায়ুসেনা। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘‘রোজ এক লক্ষ বোতল পানীয় জল বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে করে শিলচরে পাঠানো হবে।’’ শিলচর শহরে কয়েকশো মানুষ জলবন্দি হয়ে রয়েছেন। কোথাও কোথাও পানীয় জলের সমস্যা দেখা গিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন।
চলতি বছরে বন্যা পরিস্থিতিতে বিধ্বস্ত অসম। নতুন করে আরও সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০৭।
(এই প্রতিবেদনের সঙ্গে ব্যবহৃত ছবিটি পার্থ শীলের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া হয়েছিল। প্রতিবেদনটির প্রথম সংস্করণে ভুলবশত আমরা তাঁর নামটি দিইনি। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। পার্থর নাম এবং সৌজন্য-সহ প্রতিবেদনটি আমরা প্রকাশ করলাম।)