n বন্যাবিধ্বস্ত উত্তর-পূর্বে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার। শনিবার। পিটিআই
শহরের মাথায় চক্কর কাটছে হেলিকপ্টার। ছুড়ে ফেলা হচ্ছে খাবার। সেই প্যাকেট সংগ্রহ করতে জলের মধ্যে লড়াই করছেন বাসিন্দারা। যে রাস্তা গাড়ির ভিড়ে ব্যস্ত থাকে, সেখানে এখন নৌকার আনাগোনা। রাস্তাগুলো যেন ভেনিসের পরিখা! সেখানে বুক জলে খাবি খাচ্ছে মানুষ, শুয়োর, কুকুর। কোথাও ভেসে উঠছে মৃতদেহ। তার মধ্যেই নতুন প্রাণ জন্ম নিচ্ছে। সদ্যোজাতকে গামলায় শুইয়ে কোমরজল পার করে বাড়ি নিয়ে আসছেন বাবা। চিত্রটি অসমের শিলচরের।
বরাকের গর্ব শিলচর শহর। শিক্ষার রাজধানী, তথ্যপ্রযুক্তির কেন্দ্র। সেখানেই সপ্তাহব্যাপী জলছবির এমন নজিরবিহীন কোলাজ শনিবারেও অপরিবর্তিত। বাঁধ ভেঙে নদী ও শহরের রাস্তার ফারাক ঘুচে গিয়েছে। তাই সাত দিনেও জল নামার লক্ষণই নেই। আজ জেলাশাসক কীর্তি জল্লি ডাম্পারে উঠে বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন। শহরে শুক্রবার কিছু ক্ষণের জন্য ও শনিবার সকালে ঘণ্টা দেড়েকের জন্য বিদ্যুৎ আসে কিছু এলাকায়। বাসিন্দারা তার মধ্যেই যতটা সম্ভব চার্জ দিয়ে নিয়েছেন মোবাইলে।
অবশ্য বৃষ্টি কমায় অসমের অন্যান্য জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এখন ২৭টি জেলায় ২৮৯৪টি গ্রাম জলমগ্ন। বন্যা কবলিতের সংখ্যা কমে হয়েছে ২৫ লক্ষ। ৬৩৭টি ত্রাণ শিবিরে আছেন ২ লক্ষ ৩৩ হাজার মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চার জনের মৃত্যু হওয়ায় রাজ্যে বছরের প্রথম বন্যার ধাক্কায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২১ জনে।
বন্যাত্রাণে কেন্দ্রের পর্যাপ্ত সাহায্য না পাঠানো নিয়ে বিরোধীরা সরব। তার জবাবে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা আজ বলেন, “বন্যা নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত আমরা কেন্দ্রের সাহায্যেই চলছি। ত্রাণ, এনডিআরএফ ও বিমানবাহিনীর ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান, চিকিৎসা ও ওষুধ ইত্যাদি কেন্দ্রের টাকাতেই চলছে। রাজ্যের কোনও টাকায় হাত পড়েনি। কেন্দ্র যত টাকা প্রয়োজন তত টাকা খরচ করতে বলেছে।’’