অসম সীমান্তে বসবে ‘অদৃশ্য’ বেড়া

এক বছরের মধ্যে অসমে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পুরোপুরি ‘সিল’ করার নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি ও করিমগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ০৩:৫১
Share:

করিমগঞ্জে কুশিয়ারা নদীতে পরিদর্শন বিএসএফ কর্তাদের। ছবি: শীর্ষেন্দু সী।

এক বছরের মধ্যে অসমে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পুরোপুরি ‘সিল’ করার নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

Advertisement

দিল্লিতে সীমান্ত সংক্রান্ত বৈঠকে রাজনাথ সংশ্লিষ্ট দফতরকে ওই নির্দেশ দেন। সেখানে হাজির ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়, ইতিমধ্যেই বিএসএফ ও পূর্ত মন্ত্রকের কর্তা ও ইঞ্জিনিয়াররা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন। রাজনাথের নির্দেশ, ২০১৭ সালের জুন মাসের মধ্যে পুরো সীমান্ত বন্ধ করতে হবে। সীমান্ত সিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। তাদের ভিশন ডকুমেন্টের মতোই, গত কাল রাজ্যপালের ভাষণেও ছিল সেই প্রতিশ্রুতি। রাজনাথ ওই কাজে প্রয়োজনীয় হাই রেজেলিউশন ক্যামেরা, রাডার, স্বয়ংক্রিয় গ্রাউন্ড সেন্সর, ইনফ্রা-রেড সেন্সর, হাতে ধরা থার্মাল ইমেজার-সহ সব রকম আধুনিক পরিকাঠামো দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন। দফতরের তরফে জানানো হয়, এখনও পর্যন্ত প্রায় ২২৪ কিলোমিটার বেড়ার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু ৬১ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকার ১২২টি জায়গায় আধুনিক ত্রিস্তরীয় প্রযুক্তির পাকা বেড়া বসানো সম্ভব হবে না। তাই, সেখানকার ১২ কিলোমিটার অংশে কাঁটাতারের বেড়া ও বাকি ৪৯ কিলোমিটার নদী অংশের ২২টি জায়গায় ইনফ্রারেডের বেড়া বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়।

করিমগঞ্জের শহরি-সীমান্তে ‘সিঙ্গল লাইন ফেনসিং’ বসানো হবে। আজ শহরের পার্শ্ববর্তী কুশিয়ারা নদী সংলগ্ন এলাকা জলপথে ঘুরে দেখেন বিএসএফের ডিজি কে কে শর্মা। সীমান্তে বেড়ার দায়িত্বে থাকা নির্মাণ সংস্থার সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের শর্মা বলেন, ‘‘করিমগঞ্জ শহর সংলগ্ন এই নদী-সীমান্তে রোল ফেন্সিংয়ের পরিবর্তে এক লাইনের কাঁটাতারের বেড়াই বসানো হবে।’’

Advertisement

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এই সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ অংশে এখনও কাঁটাতারের বেড়া বসানো হয়নি। কুশিয়ারা নদী সীমান্তের এই এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ হচ্ছে বলে অভিযোগ। শহর এলাকায় বেড়া বসানোর ক্ষেত্রেও রয়েছে বহুবিধ সমস্যা। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে ১৫০ মিটার তো দূরের কথা, রোল ফেন্সিং বসালেও অসংখ্য বাড়ি-ঘর ভাঙতে হবে। এ নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ কয়েক দফা আলোচনাও হয়। বিজিবি প্রথমে আপত্তি করলেও এখন সে দেশের সরকারের নির্দেশে আপত্তি প্রত্যাহার করেছে। গত ৩১ মে প্রথম দফায় বিএসএফের এডিজি কুশিয়ারা নদী সীমান্ত পরিদর্শন করেন। আজ ডিজি শর্মা প্রথমে মোবারকপুর এলাকা ঘুরে দেখেন। তারপর বোট নিয়ে জলপথে চরবাজার থেকে নীলমণি রোড এলাকা ঘুরে দেখেন। করিমগঞ্জ জেলার জগন্নাথি, মনতলি এলাকায় কাঁটাতারের বাইরে থাকা মানুষদের ভিতরে নিয়ে আসার কোনও ব্যবস্থা করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি পরিবার বেড়ার এ পারে আসতে চেয়েছে। আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যাঁরা আসতে চাইছেন না তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে এই সিঙ্গল লাইন ফেন্সিং বসানো হবে। অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গে বিএসএফ প্রধান বলেন, অনেক সময় জনগণই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। জনগণের তৎপরতায় বহু অনুপ্রবেশকারীকে আটক করাও সম্ভব হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement