অশ্বিনী বৈষ্ণব। ফাইল চিত্র
প্রথমে বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনা। তার পর কো-উইনের তথ্য ফাঁসের অভিযোগ। সঙ্গে আবার প্রাক্তন টুইটার কর্তা জ্যাক ডরসির অভিযোগ। তিনটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র একটিই— অশ্বিনী বৈষ্ণব। যিনি রেল মন্ত্রকের সঙ্গেই ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকেরও দায়িত্বে। রেলের মতোই কো-উইন বা টুইটার সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখার দায়িত্ব তাঁর।
ঘটনাচক্রে বালেশ্বরের দুর্ঘটনার পরে অশ্বিনী বৈষ্ণব সেই যে অন্তরালে গিয়েছেন, কো-উইন বা টুইটার, কোনও বিতর্কেই সামনে আসেননি তিনি। যাবতীয় আক্রমণ সামলাতে হচ্ছে ইলেট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরকেই। আইআইটি-আইআইএম পাশ করা মন্ত্রী বৈষ্ণবকে নিয়ে তাই কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের কটাক্ষ, ‘‘একের পর এক বিতর্কিত ঘটনা ঘটছে অশ্বিনী বৈষ্ণবের মন্ত্রকগুলিতে। এমন ‘বিশেষজ্ঞ’কে দিয়ে মন্ত্রক চালানোর কি খুব প্রয়োজন রয়েছে?’’
এ মাসের শুরুতে বালেশ্বরে দুর্ঘটনায় পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ঘটনাস্থলে পৌঁছে টানা ৫১ ঘন্টা সেখানে রয়ে যান বৈষ্ণব। ট্রেন চলাচল শুরু হলে দিল্লি ফেরেন। ট্রেন চালু হওয়ার পরে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে কেঁদে ফেলতেও দেখা যায় তাঁকে। সেই শেষ প্রকাশ্য উপস্থিতি। তার পর থেকে প্রায় সাত দিন কেটে গিয়েছে, বৈষ্ণব ‘নিখোঁজ’।
এ দিকে রেল দুর্ঘটনার বিতর্ক থিতু হওয়ার আগেই গত কাল কোউইন তথ্যভান্ডার থেকে দেশবাসীর টিকা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস হওয়ার অভিযোগ ওঠে। দেশের ডিজিটাল তথ্যভান্ডার অসুরক্ষিত বলে আক্রমণ শানিয়ে সরব হন বিরোধীরা। তার পরেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নতুন বোমা ফাটান টুইটারের প্রাক্তন সিইও জ্যাক ডোরসি। তাঁর অভিযোগ, কৃষক আন্দোলনের সময়ে কেন্দ্রবিরোধী অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করার চাপ দিয়েছিল সরকার। এমনকি ওই সব অ্যাকাউন্ট বন্ধ না হলে ভারতে টুইটার পরিষেবা আটকে দেওয়া, প্রয়োজনে টুইটার কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশির হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করেন জ্যাক। কোউইন ও টুইটার সংক্রান্ত বিষয়গুলিও কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের আওতাধীন। কিন্তু অশ্বিনী কার্যত অদৃশ্য। পরিবর্তে সরকার পক্ষ সমর্থনে মাঠে নামানো হয় প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরকে।
প্রাক্তন আমলা তথা আইআইএম ও আইআইটি-র প্রাক্তনী অশ্বিনীকে ‘বিশেষজ্ঞ’ হিসাবে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে ওড়িশা থেকে রাজ্যসভায় জিতিয়ে এনে মন্ত্রী করা হয়। এই মুহূর্তে রেল ও ইলেকট্রনিক্স ছাড়াও যোগাযোগ মন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। সেই মন্ত্রকগুলির পরপর বিতর্কে জড়ানো নিয়ে কটাক্ষ করেই কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের প্রশ্ন, ‘‘জনপ্রতিনিধি নন, এমন ‘বিশেষজ্ঞ’কে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক চালিয়ে মানুষের যন্ত্রণা বাড়ানোর কি আদৌ কোনও প্রয়োজন রয়েছে?’’