প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
অনাস্থা বিতর্কে বৃহস্পতিবার লোকসভায় জবাবি ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের ছোড়া গুগলিতে ছক্কা হাঁকাবেন বলে সংসদীয় বৈঠকে দাবি করেছেন তিনি। তার আগে বৃহস্পতিবার সকালে বিরোধীদের দেখা গেল আটঘাট বেঁধে মাঠে নামতে। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা বিতর্কের সূচনাকারী গৌরব গগৈ বললেন, ‘‘যে মণিপুর জ্বলছে, যে মণিপুরে মা-বোনেদের বিবস্ত্র করা হচ্ছে, যৌন নিগ্রহ করা হচ্ছে, খুন করা হচ্ছে, সেই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে সংসদে দাঁড়িয়ে ক্লিনচিট দিয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ! আজ দেখব প্রধানমন্ত্রীর কী বলার আছে!’’
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টের সময় লোকসভায় জবাবি ভাষণ দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী মোদীর। তার আগে বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি বৈঠক করেছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযুষ গয়াল এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘাওয়ালের সঙ্গে। বিজেপি শিবির সূত্রে খবর, বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ যেমন পরিসংখ্যান দিয়ে বিরোধীদের ঘায়েল করেছেন, ঠিক তেমনই মোদীও বিরোধীদের প্রতিটি ইয়র্কারের জবাব পরিসংখ্যান দিয়েই মাঠের বাইরে পাঠাবেন। তবে তার আগে সংসদের বাইরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আবার মুখ খুলেছেন গগৈ, অধীররা।
অন্য দিকে, মল্লিকার্জুন খাড়্গের নেতৃত্বে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ও পাল্টা রণকৌশল ঠিক করতে বৈঠকে বসেছে।
গগৈ যেমন শাহকে আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘গোটা দেশ এখন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর অপসারণ চাইছে। কিন্তু শাহ তাঁকে ভরা সংসদে গোটা দেশের সামনে ক্লিনচিট দিচ্ছেন। এতেই শাসকের বার্তা স্পষ্ট। তারা হিংসাকে দমনের চেষ্টার বদলে তাকে উৎসাহিত করছেন।’’ অন্য দিকে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক শিব সেনা সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, ‘‘মণিপুর নিয়ে যখন লোকসভায় দেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চাওয়া হচ্ছে তখন তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সেই জন্যই তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে।’’ তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন সংসদ শুরুর আগে একটি টুইটে মোদীকে পলাতক বলেও কটাক্ষ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মণিপুর নিয়ে কথা না বলে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ইন্ডিয়া জোট অবশেষে তাকে কথা বলতে বাধ্য করল মণিপুর ইস্যুতে।’’
তবে এ সব শুনে শাসক দলের সাংসদেরা কটাক্ষ করে বলেছেন, বিরোধীরা এখন লাটাই গোটাচ্ছে। তারা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে বুধবার জবাব পেয়েছে। শাসক দলের সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ তাঁদের প্রতিটি বিষয়কে পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের অভিযোগ ভুল এ বার সংসদে মোদীর বক্তৃতা দেওয়াকেই নিজেদের সাফল্য বলে তুলে ধরতে চাইছে বিরোধীরা। যা হাস্যকর।