COVID-19 Vaccine

টিকা-বৈঠকে ভারত, চিন্তা বাড়াচ্ছে দূষণ

চিন থেকে প্রতিষেধক কিনতে চায় না ভারত। কিন্তু একা বিপুল পরিমাণ টিকা উৎপাদন করাটাও দুঃসাধ্য।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২২
Share:

ছবি: পিটিআই।

করোনার পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকা উৎপাদন ও সার্বিক বিপুল খরচ সামাল দেওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আজ বৈঠক করলেন ভারতের বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। প্রায় ১৮০ জনকে নিয়ে এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব থেকে শুরু করে আইসিএমআর, সিএসআইআরের মতো প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

বৈঠকটি যে হতে চলেছে, গত সপ্তাহেই সেই খবর জানা গিয়েছিল। চিন থেকে প্রতিষেধক কিনতে চায় না ভারত। কিন্তু একা বিপুল পরিমাণ টিকা উৎপাদন করাটাও দুঃসাধ্য। মাথায় রাখতে হচ্ছে খরচের বিষয়টিও। এ দিনের বৈঠকটি ভারতের টিকা-কূটনীতিরই অঙ্গ। এ দেশে কী ভাবে টিকা তৈরি হচ্ছে, তা জানানোর পাশাপাশি ভারতের হাত ধরতে উৎসাহী দেশগুলিকে বার্তাও দেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে। পুণেতে টিকা সংক্রান্ত গবেষণা ও উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে প্রয়োজনে রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে যেতে চায় কেন্দ্র।

সূত্রের বক্তব্য, কী ভাবে টিকা দেওয়া হবে, তার একটি নীল নকশা নিয়েও আলোচনা করেছে সরকারি বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠী। তাতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালের পাশাপাশি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, স্কুল কিংবা পঞ্চায়েত ভবনগুলিকে কোভিড টিকাকরণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। রাজ্য সরকারগুলিকেই সেগুলিকে চিহ্নিত করতে বলা হবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই এসএমএস এবং কিউআর কোড পাঠিয়ে টিকা-গ্রহীতাদের নজরে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। টিকাকরণের ভবিষ্যৎ নিয়ে অবশ্য ইতিবাচক ইঙ্গিতই দিচ্ছে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের একটি যৌথ সমীক্ষা। ১৫টি দেশের ১৮,৫২৬ জন প্রাপ্তবয়স্কের উপরে চালানো ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতের ৮৭ শতাংশই মানুষই টিকা নিতে আগ্রহী।

Advertisement

এই আশার মধ্যেও আশঙ্কা বাড়াচ্ছে দূষণ। শীতের মুখে উত্তর ভারতে ফসলের গোড়া পোড়ানোর ধোঁয়ায় জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি। করোনার আবহে বায়ুদূষণ নিয়ে আজ নগরোন্নয়ন বিষয়ক সংসদীয় প্যানেলের কাছে সরাসরি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, বায়ুদূষণের ফলে কোভিড রোগীদের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে বলে মন্ত্রকের তরফে প্যানেলকে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, দূষণের ফলে মানুষের গড় আয়ু ১.৭ বছর পর্যন্ত কমে যাচ্ছে। ১২.৫ শতাংশ মৃত্যুর কারণও সেই দূষণ। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণায় বাহিত হয়ে করোনাভাইরাসের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে মন্ত্রকের তরফে। তাই জোর দেওয়া হয়েছে মাস্ক ব্যবহার ও অন্যান্য সুরক্ষা ব্যবস্থায়।

বস্তুত, ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রেও দাবি করা হয়েছে যে, দীর্ঘদিন ধরে বাতাসের ‘পিএম ২.৫’ কণা যাঁদের শরীরে বেশি প্রবেশ করছে, তাঁদের কোভিডে মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি। আমেরিকার তিন হাজারেরও বেশি কাউন্টিতে গবেষণা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় শিয়াও য়ু-সহ একদল গবেষক। তবে বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement