রাহুল গান্ধী (ছবিতে বাঁ দিকে) এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী ঐক্যে শান দিতে পটনার পর এ বার বেঙ্গালুরুতে বৈঠকে বসতে চলেছে বিরোধী দলগুলি। তবে চলতি মাসের ১৭ এবং ১৮ তারিখ বিরোধী বৈঠকের আগে আপ এবং কংগ্রেসের মধ্যে ‘দূরত্বে’র বিষয়টি আবার প্রকাশ্যে চলে এল। দূরত্বের নেপথ্যে আবারও সেই দিল্লির অর্ডিন্যান্স বিতর্ক। কিছু দিন আগেই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেয়েছে আপ। আমন্ত্রণ পেয়েই অর্ডিন্যান্স প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে অবস্থান স্পষ্ট করার আর্জি জানিয়েছেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
সংবাদমাধ্যমের সামনে কেজরীওয়াল এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “কংগ্রেসের তরফ থেকে আমরা একটা আমন্ত্রণ পেয়েছি।” তার পরেই পটনা বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “কংগ্রেস আশ্বাস দিয়েছিল যে, সংসদের পরবর্তী অধিবেশন শুরু হওয়ার ১৫ দিন আগে তারা প্রকাশ্যে এই অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করবে এবং সংসদেও এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেবে। আমরা এখনও অপেক্ষা করছি। উল্লেখ্য, সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামী ২০ জুলাই। ঘটনাচক্রে, কংগ্রেস বাদে বৈঠকে আমন্ত্রণ পাওয়া প্রায় সব দলই অর্ডিন্যান্স বিতর্কে আপের পাশে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য যে, কংগ্রেস এবং আপের মধ্যে ‘দূরত্ব’ আজকের নয়। গত ২৩ জুন পটনায় বিরোধীদের বৈঠকেও এই দূরত্বের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। দিল্লির অর্ডিন্যান্স বিতর্কে কংগ্রেসের সমর্থন চেয়ে তদ্বির করা হলেও হাত শিবিরের তরফে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি বলে অরবিন্দ কেজরীওয়ালদের অভিযোগ। পটনা থেকে ১৬টি বিজেপি বিরোধী দল একসঙ্গে চলার বার্তা দিলেও, বৈঠক শেষে হওয়া সাংবাদিক বৈঠকে কেজরীওয়াল কিংবা আপের কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। অর্ডিন্যান্স নিয়ে মতপার্থক্যের কারণেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক ছেড়েছেন, এমন জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখন বৈঠকের মূল উদ্যোক্তা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানান, বিমান ধরার কারণেই তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গিয়েছেন কেজরীওয়াল। আবার কিছু দিন আগেই দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস এই মর্মে একটি প্রস্তাব পাশ করায় যে, কেন্দ্রের বিজেপি এবং দিল্লির আপ সরকারের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এক হয়ে লড়বেন কংগ্রেস কর্মীরা।
গত ১১ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। কিন্তু তার পরেই অর্ডিন্যান্স এনে ১০ পাতার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, ‘জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস’ কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ এবং বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। (দিল্লির) মুখ্যমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারপার্সন। কিন্তু কমিশনে কেন্দ্র এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রতিনিধি সংখ্যা বেশি থাকায় আমলাদের বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁরাই কার্যত ‘নির্ণায়ক’ হবেন। ১২ মে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ আনেন কেজরীওয়াল। তার পর থেকে এই নিয়ে বিতর্ক চলছেই।