বাবা-মায়ের সঙ্গে মেজর মুস্তাফা। ছবি টুইটার।
আর ক’দিন বাদেই তাঁর বিয়ের আনন্দে জমজমাট হত বাড়ি। কিন্তু একটা দুর্ঘটনায় এক লহমায় সবটা বদলে গেল। আনন্দোল্লাসের বদলে কান্নার রোলে শোকে পাথর গোটা এলাকা। গত শুক্রবার সকালে অরুণাচলপ্রদেশের আপার সিয়াঙে সেনা কপ্টার দুর্ঘটনায় যে পাঁচ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রাজস্থানের উদয়পুরের মেজর মুস্তাফা বোহারা।
কিছু দিন বাদেই তাঁর বিয়ের কথা ছিল। বিয়ের আয়োজন করতে কিছু দিন আগেই বাড়িতে গিয়েছিলেন মুস্তাফা। সে সময় বিয়ের সব আয়োজনের কাজ সেরেছিলেন। কথা ছিল, এর পর একে বারে বিয়ে করতে ঘরে ফিরবেন মুস্তাফা। কিন্তু বিয়ে করে বৌ নিয়ে আর ঘরে ফেরা হল না মুস্তাফার। শুক্রবারের দুর্ঘটনায় মুস্তাফার মৃত্যুর খবরে স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর বাড়িতে শোকের ছায়া নেমেছে।
শুক্রবার খবর প্রকাশ্যে আসার পরই তাঁর বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন আত্মীয়স্বজনরা। অথচ, ক’দিন বাদেই তাঁর বাড়িতে ওই আত্মীয়স্বজনদেরই সমাগম হওয়ার কথা ছিল। তবে উপলক্ষটা যে এ ভাবে বদলে যাবে, তা বোধহয় কেউ ভাবতে পারেননি। তবে তাঁর বিয়ে ঠিক কোন তারিখে হওয়ার কথা ছিল, তা জানা যায়নি। মুস্তাফার বাবা কুয়েতে কাজ করেন। ছেলের খবর শুনে উদয়পুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি।
হীতেশ কুমার নামে উদয়পুরের এক বাসিন্দা সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, পুত্রশোকে অঝোরে কেঁদে চলেছেন মুস্তাফার মা। তাঁর শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভাল না। একই অবস্থা মুস্তাফার বোনেরও। রাজস্থানের খেরোদা গ্রামে মুস্তাফাদের বাড়ি। তবে বর্তমানে উদয়পুরে অজন্তা হোটেল স্ট্রিটে থাকেন তাঁরা। শনিবার সকালে মুস্তাফার বাড়িতে যান বল্লভনগরের বিধায়ক প্রীতি শেখাওয়াত।
জানা গিয়েছে, খেরোদার উদয় শিক্ষা মন্দির উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন মুস্তফা। উদয়পুর শহরে আসার পর সেন্ট পলস স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি। এর পর তিনি ভারতীয় সেনায় যোগ দিয়েছিলেন। যেখানে বৌ নিয়ে বরযাত্রীদের সঙ্গে শোভাযাত্রা করে ঘরে ফেরার কথা ছিল মুস্তাফার, সেখানে জাতীয় পতাকায় মোড়া তাঁর নিথর দেহ ফিরবে। রবিবার সন্ধ্যায় মুস্তাফার দেহ তাঁর বাড়িতে ফেরানো হতে পারে।