প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ভারতের অর্থনীতি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন, ২০২১) মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি পেয়েছে ২০.১ শতাংশ। বস্তুত, জিডিপি-র বৃদ্ধি ছাপিয়ে গিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই) পূর্বাভাসকেও। করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামলে এমন বৃদ্ধি যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ।
২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি সঙ্কোচন পৌঁছে গিয়েছিল তলানিতে। প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন, ২০২০) রেকর্ড পতন হয়ে জিডিপির সঙ্কোচন বা ঋণাত্মক বৃদ্ধি হয়েছিল ২৪.৪ শতাংশ। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়ে দাঁড়ায় (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২০) মাইনাস ৭.৫ শতাংশে।
ওই সময় সীমার বড় অংশ জুড়েই দেশে চলেছিল লকডাউন। আনলক পর্ব শুরুর পরে তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২০) জিডিপি ০.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। শেষ তথা চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি-মার্চ, ২০২০) তা আরও কিছুটা বেড়ে ১.৬ শতাংশে পৌঁছয় বলে ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস (এনএসও)-র পরিসংখ্যান জানিয়েছিল।
সামগ্রিক ভাবে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে জিডিপি-র সঙ্কোচন ছিল ৭.৩ শতাংশেরও বেশি। হয়েছিল, গত চার দশকের মধ্যে অবনমনের নয়া রেকর্ড। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির জেরে রাজস্ব আদায় কমা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নিকরণে ধাক্কা এবং অতিমারি সামলাতে খরচ বৃদ্ধিই ছিল এর প্রধান কারণ।
এই পরিস্থিতিতে অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ হানা দেওয়ায় ফের আর্থিক কর্মকাণ্ডে আঘাত আসে। অর্থনীতিবিদদের একাংশ আশঙ্কা করেছিলেন, এর জেরে ফের পতন ঘটবে জিডিপি-র। কিন্তু সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত করে জিডিপি-র দুই অঙ্কের বৃদ্ধি ঘটেছে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গোড়ায় আরবিআই পূর্বাভাস দিয়েছিল, ২০২১-২২ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি-র বৃদ্ধি ১৮.৫ থেকে ২৬.২ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে। কিন্তু জুন মাসে তা সংশোধন করা হয়। আরবিআই জানায়, ২০২১-২২ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধি ৯.৫ থেকে ১০.৫ শতাংশ হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি নিয়ে পূর্বাভাস বদলেছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)-ও। চলতি বছরের মার্চে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১২.৫ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হলেও সংস্থার আর্থিক নীতি সংক্রান্ত কমিটির জুনের বৈঠকের তা সংশোধন করা হয়। জিডিপি বৃদ্ধির হার ৯.৫ শতাংশ হতে পারে বলে জানায় আইএমএফ।