— প্রতীকী ছবি।
উচ্চশিক্ষায় ভাল ফলের আশায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কমবয়সিরা ভিড় করেন রাজস্থানের কোটায়। কিন্তু সেই কোটাই কি ভারতের ‘আত্মহত্যার রাজধানী’ হয়ে উঠল? সোমবার ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটের প্রস্তুতিরত এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা এই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। গত এক বছরে এ নিয়ে ২৫ জন কমবয়সি পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হল কোটায়।
১৭ বছরের প্রিয়ম সিংহের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের মাউতে। গত দেড় বছর ধরে ছাত্রীটি কোটায় থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রবেশিকা পাশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সে থাকত কোটার বিজ্ঞান নগর এলাকার একটি হস্টেলে। বিজ্ঞান নগর থানার স্টেশন ইন-চার্জ কৌশল্যা জানিয়েছেন, সোমবার সকালে প্রিয়ম একটি কোচিং সেন্টারে পড়তে গিয়েছিল। দুপুর ৩টে নাগাদ কোচিং থেকে বেরিয়ে হস্টেলে ফেরার পথে রাস্তায় আচমকাই বমি করতে শুরু করে সে। অবস্থার অবনতি হতে থাকলে বন্ধুরা তাকে তড়িঘড়ি নিকটবর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ ওই হাসপাতালেই প্রিয়মের মৃত্যু হয়।
পুলিশের দাবি, প্রিয়ম কোচিং সেন্টার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিষপান করেছিলেন। তারই প্রতিক্রিয়ায় বমি এবং তার অসুস্থ হয়ে পড়া। প্রিয়মের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের লোকেরা হাজির হলে হস্টেলে তার ঘর তল্লাশি করে দেখবে পুলিশ। আপাতত ১৭ বছরের তরতাজা ছাত্রীর নিথর দেহ মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য চলছে অপেক্ষা।
ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকায় উত্তীর্ণ হতে ভারতের কমবয়সি পড়ুয়াদের ‘অটোম্যাটিক চয়েস’ হয়ে উঠেছে মরুরাজ্যের কোটা শহর। অসংখ্য কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করে প্রতি বছর লক্ষাধিক পড়ুয়া উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লক্ষ্যে দৌড় শুরু করে এই শহর থেকেই। কিন্তু সম্প্রতি সেখানে পড়ুয়াদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা লাফিয়ে বাড়ছে। শুধুমাত্র এ বছর প্রিয়মকে নিয়ে ২৫ জন পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল কোটায়। আত্মহত্যার ঘটনা থামাতে প্রশাসন একাধিক পদক্ষেপ করেছে। হস্টেল এবং কোচিং সেন্টারের লোকজনকেও পড়ুয়াদের উপর কড়া নজর রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রিয়মের ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, তাতে কোনও সুবিধাই হয়নি।