নাবালিকার যৌন হেনস্থায় অভিযুক্তের শাস্তি লাঘব করল না হাই কোর্ট। প্রতীকী ছবি।
ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণের জন্য ধর্ষকের বীর্যপাত হয়েছিল কি না, তা জানা জরুরি নয়। নারীর অমতে যোনিতে পুরুষাঙ্গের অনুপ্রবেশই ধর্ষণ হিসাবে গণ্য হবে, একটি মামলায় এমনটাই মন্তব্য করল অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্ট।
অন্ধ্রের উচ্চ আদালতের বিচারপতি চিকাটি মানবেন্দ্রনাথ রায় একটি পকসো মামলায় সম্প্রতি এই মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যদি তথ্য এবং প্রমাণের দ্বারা পুরুষাঙ্গের অনুপ্রবেশের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়, তবে পকসো আইনের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণের জন্য তা-ই যথেষ্ট। ধর্ষকের বীর্যপাতের প্রমাণ এ ক্ষেত্রে জরুরি নয়।
পকসো মামলায় ২২ পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা করেছে অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্ট। বিচারপতি জানিয়েছেন, যদি ১২ বছরের কমবয়সি কোনও শিশুকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে পকসো আইনের ৫ এবং ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
২০১৫ সালে এক নাবালিকার যৌন হেনস্থার মামলায় অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্ট এই রায় দিয়েছে। ২০১৬ সালেই নিম্ন আদালত অভিযুক্ত যুবককে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল। তাঁকে ৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।
অভিযুক্ত নিম্ন আদালতের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, নাবালিকার সঙ্গে তাঁর সঙ্গম বা যৌনমিলনের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বীর্যের চিহ্নও মেলেনি।
কিন্তু চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, নাবালিকার যোনিতে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছিল। ফলে পুরুষাঙ্গ যে সেখানে প্রবেশ করানো হয়েছিল, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এমনকি, যোনিতে আঙুল প্রবেশ করানোর কথাও জানিয়েছিলেন চিকিৎসক।
সব দিক বিবেচনা করে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র বীর্যপাত হয়নি বলে ধর্ষক পার পেয়ে যেতে পারেন না। বীর্যপাত হোক বা না হোক, ধর্ষণ ধর্ষণই। তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তিনি নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখেছেন।