Athar Khan

চমকপ্রদ প্রেমকাহিনি, টিকল না বিয়ে

দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতক টিনা। তিনিই  আইএএসে প্রথম স্থানাধিকারী প্রথম দলিত মহিলা। বাবা-মা দু’জনেই ইঞ্জিনিয়ার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জয়পুর শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২০ ০৬:২২
Share:

সে দিন: আতাহার খান ও টিনা ডাবি

তাঁদের আলোড়ন-ফেলা প্রেম পর্বের সূচনা হয়েছিল নর্থ ব্লকের অলিন্দে। পাঁচ বছরের মাথায় তাঁরাই বিচ্ছেদের জন্য আবেদন জানালেন জয়পুরের এক আদালতে।

Advertisement

টিনা ডাবি এবং আতাহার খান। ২০১৫-র এই দুই আইএএস টপারের ভালবাসার কাহিনি নিয়ে তখন কম চর্চা হয়নি। সে বছর ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন ভোপালের মেয়ে টিনা। আর দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন পহেলগামের আতাহার। নর্থ ব্লকের ‘ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনাল অ্যান্ড ট্রেনিং’ দফতরে আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় প্রথম দেখা দু’জনের। আতাহার পরে বলেছিলেন, প্রথম দর্শনেই টিনার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। পরে মুসৌরির ‘লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি ফর অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে’ প্রশিক্ষণের সময়ে দু’জনের সম্পর্ক গাঢ় হয়। প্রশিক্ষণের পরে দু’জনেরই পোস্টিং হয় রাজস্থানে। ২০১৮ সালে বিয়ে করেন তাঁরা।

দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতক টিনা। তিনিই আইএএসে প্রথম স্থানাধিকারী প্রথম দলিত মহিলা। বাবা-মা দু’জনেই ইঞ্জিনিয়ার। অন্য দিকে, আতাহারের বাড়ি কাশ্মীরের পহেলগামে। হিমাচল প্রদেশের মণ্ডী আইআইটি থেকে বি-টেক পাশ করেছিলেন। তাঁদের এই ‘হাই প্রোফাইল’ সম্পর্ক নিয়ে তখন বেশ তোলপাড় হয়েছিল। তার একটা কারণ যদি হয় দু’জনের আইএএস র‌্যাঙ্ক, আর একটি কারণ অবশ্যই তাঁদের ভিন্ন ধর্ম পরিচয়। পহেলগাম ক্লাবে তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। প্রচুর প্রশংসার সঙ্গে সঙ্গে কট্টরপন্থীদের সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন তাঁরা। এই বিয়েকে ‘লাভ জেহাদ’ আখ্যা দিয়েছিল কয়েকটি হিন্দু গোষ্ঠী।

Advertisement

জয়পুর, দিল্লি এবং পহেলগামে তাঁদের বিয়ের তিনটি আলাদা অনুষ্ঠান হয়। দিল্লির রিসেপশনে এসেছিলেন বেঙ্কাইয়া নায়ডু, সুমিত্রা মহাজন এবং রবিশঙ্কর প্রসাদ। তাঁদের পাঠানো শুভেচ্ছা-বার্তায় রাহুল গাঁধী লিখেছিলেন, ‘‘অসহিষ্ণু এই সময়ে আপনাদের ভালবাসার কাহিনি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দেবে।’’

এ বছর অতিমারি আবহে ফের খবরের শিরোনামে এসেছিলেন টিনা ও আতাহার। দেশে তখন লকডাউন চলছে। রাজস্থানের ভিলওয়াড়া জেলা রাজ্যের অন্যতম ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। সেখানে সংক্রমণ রুখতে তখন কঠোর লকডাউন শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন। সঙ্গে চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা। তিন দিন ধরে স্থানীয় প্রশাসনের ৮৫০টি দল ৫৬ হাজার ২৫টি বাড়ি ঘুরে ২ লক্ষ ৮০ হাজার ৯৩৭ জনের সঙ্গে কথা বলে এবং ২২৫০ জনকে ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা-জাতীয় কোনও রোগে আক্রান্ত’ বলে চিহ্নিত করে। কোয়রান্টিনে পাঠানো হয় এই ২২৫০ জনকে। এর ফলও মেলে হাতেনাতে। দু’সপ্তাহে ভিলওয়াড়া প্রায় সংক্রমণমুক্ত হয়ে যায়। এপ্রিল মাসের সেই প্রশাসনিক পদক্ষেপ ‘ভিলওয়াড়া মডেল’ নামে খ্যাত। যে প্রশাসনিক কর্তারা সেই মডেলের রূপকার ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম টিনা এবং আতাহার।

জানা গিয়েছে, জয়পুরের এক আদালতে মিউচুয়াল ডিভোর্সের জন্য আবেদন করেছেন দম্পতি। বিয়ের দু’বছরের মাথায় কেন তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিলেন, তা অবশ্য জানাননি টিনা-আতাহার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement