—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা চলতি সফরের হাত ধরে ভারতে ফিরছে প্রায় তিনশোটি চুরি অথবা পাচার হয়ে যাওয়া বিভিন্ন পুরাকীর্তি। প্রধানমন্ত্রীর আমেরিকা সফর চলাকালীন ভারতের হাতে এই রকম ২৯৭টি প্রাচীন সামগ্রী তুলে দিয়েছে আমেরিকা। মোদী-শাসনের ১০ বছরে এই নিয়ে বিদেশ থেকে মোট ৬৪০টি প্রাচীন পুরাকীর্তি ফিরে পেয়েছে ভারত।
গত কাল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বাসভবনে মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ফাঁকেই ২৯৭টি পুরাতাত্ত্বিক সামগ্রীর প্রতীকী হস্তান্তর করা হয়। এর পরে বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়ে মোদী নিজের এক্স-হ্যান্ডলে লেখেন, ‘ভারতের ২৯৭টি মূল্যবান পুরাকীর্তি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং আমেরিকা সরকারের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’ এক বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, “এই পুরাকীর্তিগুলির কেবলই ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে তা নয়, এগুলি সভ্যতা ও চেতনার ধারক-বাহকও বটে।”
মন্ত্রকের তরফে আরও সংযোজন, “প্রত্নসামগ্রীগুলি প্রায় চার হাজার বছরের পুরনো। এগুলির মধ্যে বেশির ভাগই পূর্ব ভারতের পোড়ামাটির পুরাকীর্তি। এ ছাড়াও পাথর, ধাতু, কাঠ এবং হাতির দাঁত দিয়ে তৈরি পুরাকীর্তিও রয়েছে, যা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যকে বহন করে।” পুরাকীর্তিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বেলেপাথরের তৈরি দশম-একাদশ শতকের একটি ‘অপ্সরা’ মূর্তি, যা মধ্যভারতে তৈরি। এ ছাড়াও রয়েছে পঞ্চদশ-ষোড়শ শতকের এক জৈন তীর্থঙ্করের ব্রোঞ্জের মূর্তি। পূর্ব ভারতে তৈরি তৃতীয়-চতুর্থ শতকের একটি টেরাকোটার ফুলদানির পাশাপাশি ফিরে আসছে পাথরের একটি ভাস্কর্য, যার বয়স আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতক। এটি দক্ষিণ ভারতে তৈরি।
এ ছাড়াও ফেরত পাওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ব্রোঞ্জের তৈরি গণেশের মূর্তি। দক্ষিণ ভারতে তৈরি এই মূর্তিটি সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতকে তৈরি হয়েছিল। উত্তর ভারতে তৈরি গৌতম বুদ্ধের একটি দন্ডায়মান মূর্তি, যা পঞ্চদশ বা ষোড়শ শতকে তৈরি বলে অনুমান। পাশাপাশি পূর্ব ভারতের একটি ব্রোঞ্জের তৈরি বিষ্ণু মূর্তিও রয়েছে তালিকায়। এটি সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি কোনও সময়ে তৈরি হয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা।
কাল বাইডেনকে পাল্টা উপহার হিসেবে রুপোর তৈরি ভারতীয় রেলের বাষ্পচালিত ইঞ্জিনের এক ক্ষুদ্র সংস্করণ তুলে দিয়েছেন মোদী। বাইডেন-পত্নীকে দিয়েছেন কাশ্মীরের পশমিনা শাল।