Congress

‘পুলিশ লাগিয়ে তোর কী অবস্থা করি দেখ’ 

ধৃত নুমানুদ্দিন, সালিকুর রহমান এবং সালেক আহমেদকে পরে আদালতের নির্দেশে জেলে পাঠানো হয়েছে৷ সালিকুর গ্রামরক্ষী বাহিনীর সদস্য৷ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি ও শিলচর শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২০
Share:

ফাইল চিত্র।

হিমন্ত ও পীযূষের হুমকিকাণ্ড নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি উত্তপ্ত থাকার মধ্যেই এ বার কমলপুরের মিত্রজোটের প্রার্থী তথা বিজেপি নেতা দিগন্ত কলিতার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আনলেন কংগ্রেস নেতা পার্শ্ব কলিতা। তাঁর দাবি, কংগ্রেস প্রার্থী কিশোর ভট্টাচার্যের সঙ্গে প্রচার সেরে ফেরার পথে তাঁকে ফোন করেন দিগন্ত। বলেন, “২ মে পর্যন্ত অপেক্ষা কর। যে ভাবেই হোক আমিই বিধায়ক হচ্ছি। তার পর পুলিশ লাগিয়ে তোর কী অবস্থা করি দেখ। তোর পরিবারকেও আমি শেষ করে দেব।” দিগন্ত কলিতার বিরুদ্ধে রঙিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কমলপুরের প্রাক্তন বিধায়ক উত্তরা কলিতার পুত্র পার্শ্ব।

Advertisement


বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা যে ভাবে সাংবাদিক ও বিরোধীদের হুমকি দিচ্ছেন এবং অসমের বিভিন্ন স্থানে সন্দেহজনক ভাবে ইভিএম বাক্স উদ্ধার হওয়ার প্রতিবাদে আজ গুয়াহাটিতে কংগ্রেস ধর্না কর্মসূচি নেয়। নেতৃত্বে দেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা সলমন খুরশিদ, জিতেন্দ্র সিংহরা। দুই সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া অসমের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী পীযূষ হাজরিকার গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সাংবাদিকরাও। প্রতিবাদে যোগ দিয়েছে আমসু, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, জাতীয় যুব ছাত্র পরিষদ। পীযূষ ও হিমন্তর প্রার্থীপদ বাতিলেরও দাবি তুলেছে কংগ্রেস।


প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী খুরশিদ বলেন, “গত কয়েকটা দিন অসমের গণতন্ত্রের ইতিহাসের কালো অধ্যায়। ক্ষমতা ধরে রাখতে না পারার আশঙ্কায় বিজেপি মরিয়া হয়ে ব্ল্যাকমেলিং, হুমকি, প্রলোভন, এমনকি ইভিএম চুরির মতো সব রকম অগণতান্ত্রিক রাস্তায় হাঁটছে।”
যে সাংবাদিককে ফোনে সরাসরি হুমকি দিয়েছিলেন পীযূষ, তাঁকে দেহরক্ষী দিয়েছেন এসপি। ওই সাংবাদিকের মোবাইল জমা নিলেও পীযূষের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি এখনও। জমা নেয়নি তাঁর মোবাইলও।

Advertisement


পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পালের স্ত্রীর গাড়ি থেকে রাতাবাড়ি কেন্দ্রের ইভিএম উদ্ধার হওয়ার ঘটনা নিয়ে বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, ডিফু ও করিমগঞ্জে যেখানেই ইভিএম অন্য গাড়িতে তোলার ঘটনা ঘটেছে সব ঘটনার তদন্ত চালাতে হবে। করিমগঞ্জ জেলা ইভিএম কাণ্ডের ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক আনবুমাথান এমপি।


রাতাবাড়ি আসনের ইন্দিরা এমভি স্কুল ভোটকেন্দ্রের ভোটকর্মীরা কোন পরিস্থিতিতে ইভিএম নিয়ে অন্যের ব্যক্তিগত গাড়িতে উঠলেন, তা খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলাশাসক রাজেশ টেরনকে বলা হয়েছে৷ তাঁকে সাহায্য করবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার শৌভিক দত্ত৷ তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা করতে রাজেশবাবুকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক৷ পুলিশ জানিয়েছে, ইভিএম-বাহী ওই গাড়িতে ভাঙচুর এবং ভোটকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷


ধৃত নুমানুদ্দিন, সালিকুর রহমান এবং সালেক আহমেদকে পরে আদালতের নির্দেশে জেলে পাঠানো হয়েছে৷ সালিকুর গ্রামরক্ষী বাহিনীর সদস্য৷


এ ছাড়াও, আরও তিন জনকে থানায় আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷ কংগ্রেস এবং এআইইউডিএফের এক যৌথ প্রতিনিধি দল পরে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে তাদের মুক্তির দাবি জানায়৷ প্রাক্তন এআইইউডিএফ সাংসদ রাধেশ্যাম বিশ্বাসের নেতৃত্বে প্রতিনিধিরা বলেন, তাঁরা সবাই নির্দোষ, সাধারণ জনতা৷


কাছাড়ের জেলাশাসক কীর্তি জল্লিও দুটি নির্বাচনী হিংসার ঘটনায় দুটি পৃথক ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ মধ্য ধনেহরি এলপি স্কুলে বিজেপি প্রার্থী তথা ডেপুটি স্পিকার আমিনুল হক লস্করের নিরাপত্তা রক্ষীর গুলিচালনার ঘটনার তদন্ত করবেন ডিস্ট্রিক্ট ডেভেলপমেন্ট কমিশনার বিসি দাস৷ অব্যবহৃত ইভিএম-বাহী গাড়িতে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনার তদন্ত করবেন ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ নাথ৷ তাঁদেরও রিপোর্ট পেশের জন্য তিন দিন সময় দেওয়া হয়েছে৷


কংগ্রেসের আরও দাবি, নির্বাচনের চার দিন আগে বিপিএফের তামুলপুরের প্রার্থীকে জোর করে বিজেপিতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। তাই তামুলপুরে ভোটগ্রহণ পিছিয়ে দিতে হবে। তামুলপুরে বিপিএফের প্রার্থী রঞ্জা খুংগুর বসুমাতারি ইতিমধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যদিও প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ইভিএমে থাকবে। কিন্তু প্রার্থী নিজেই বলছেন, “আমি আর বিপিএফে নেই, লড়ছি না। তাই মানুষ যেন অন্যকে ভোট দেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement