ফাইল ছবি
ওমিক্রনের প্রকোপ বাড়ার ফলে নির্বাচনী জনসভা নিষিদ্ধ করা ও উত্তরপ্রদেশে ভোট পিছনোর পরামর্শ দিয়ে আপাতত শিরোনামে বিচারপতি শেখরকুমার যাদব। কিন্তু আগেই একাধিক রায়ে নানা পরামর্শ ও মন্তব্যের জেরে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এসেছেন ইলাহাবাদ হাই কোর্টের এই বিচারপতি।
গত কাল এক জামিনের নির্দেশে বিচারপতি যাদব ইলাহাবাদ হাই কোর্টের শুনানির সংখ্যা কমাতে হাই কোর্ট প্রশাসনকে পরামর্শ দেন। পাশাপাশি জানান, কোভিডের প্রকোপের ফলে নির্বাচনী জনসভা নিষিদ্ধ করা ও উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট পিছনোর কথা ভেবে দেখা উচিত নরেন্দ্র মোদী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের। পাশাপাশি বিনা মূল্যে কোভিড টিকা প্রকল্পের জন্য মোদী সরকারের প্রশংসা করেন। এই নির্দেশের কপি নির্বাচন কমিশন ও ইলাহাবাদ হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সেপ্টেম্বরে তাঁর এক নির্দেশ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। উত্তরপ্রদেশ গোহত্যা রোধ আইনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির জামিন খারিজ করেন বিচারপতি যাদব। সেই মামলার শুনানির সময়ে তিনি বলেন, ‘‘গরুই একমাত্র প্রাণী যারা নিঃশ্বাসের সঙ্গে অক্সিজেন ত্যাগ করে।’’ গরুকে ‘জাতীয় প্রাণী’ ও গোরক্ষাকে ‘হিন্দুদের মৌলিক অধিকার’-এর তকমা দেওয়ার কথা বিবেচনা করতে সংসদকে পরামর্শ দেন তিনি।
অক্টোবরেই ফের একটি রায়ে বিতর্কিত পরামর্শ দেন তিনি। রাম, কৃষ্ণ, রামায়ণ, গীতা, মহর্ষি বাল্মিকী, মহর্ষি বেদ ব্যাসকে ‘জাতীয় মর্যাদা’ ও ‘হেরিটেজ’-এর সম্মান দিতে আইন আনার কথা ভাবতে সরকারকে পরামর্শ দেন তিনি। নির্দেশে বলেন, ‘‘রাম প্রত্যেক নাগরিকের হৃদয়ে আছেন। ভারত তাঁকে ছাড়া অসম্পূর্ণ।’’ ভারতের ‘সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ নিয়ে স্কুলে পঠনপাঠন আবশ্যিক করার পরামর্শও দেন তিনি।
অন্য একটি মামলায় ভিন্ন ধর্মের পাত্রপাত্রীর বিয়ে নিয়েও মন্তব্য করেন ওই বিচারপতি। সেখানে আকবর ও যোধাবাইকে দুই ধর্মের পাত্রপাত্রীর ভাল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। বিচারপতি যাদব বলেন, ‘‘সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের কোনও সদস্য যদি অপমানিত হয়ে ধর্ম পরিবর্তন করেন তবে দেশ দুর্বল হয়।’’ অপমানিত হয়ে ধর্ম পরিবর্তনের উদাহরণ হিসেবে তিনি ভীমরাও অম্বেডকরের কথা উল্লেখ করেন। সেইসঙ্গে নির্দেশে লেখেন, ‘‘আমরা গরিব, প্রতিবন্ধী ও মহিলাদের ভুল বুঝিয়ে ধর্মান্তরণের খবর পাচ্ছি। বিদেশে থাকা কিছু শক্তি দেশের ক্ষতি করার জন্য এ সব কাজে অর্থ জোগাচ্ছে।’’