অজিত জোগী। ফাইল চিত্র।
জনজাতি সমাজের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেই রাজনীতিতে জাঁকিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু দু’দশক পর জাত ভাঁড়ানোর অভিযোগ উঠল ছত্তীসগঢ়ের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী অজিত জোগীর বিরুদ্ধে। হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিশেষ কমিটির তদন্তে এই তথ্য উঠে এসেছে। এর পর তাঁর তফসিলি উপজাতি শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিধায়ক পদও বাতিল করা হতে পারে বলে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।
জনসাতি সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে এত দিন সমস্ত সুযোগ সুবিধাই ভোগ করেছেন অজিত জোগী। মেক্যানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে প্রথমে অধ্যাপনা করতেন। পরে আইপিএস এবং আইএএস পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হন। তার পরেই কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ। ২০০০ সালে পৃথক ছত্তীসগঢ় রাজ্য গঠিত হলে, সেখানকার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন অজিত।
সেই সময় থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে জাত ভাঁড়ানোর অভিযোগ উঠতে শুরু করে। ২০০১ সালে আদালতে তাঁর জনজাতি পরিচয়টিকে প্রথম চ্যালেঞ্জ করেন বিজেপি নেতা নন্দকুমার সাই। ২০১১ সালে মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। সেই সময় একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ে জোগীর শংসাপত্র যাচাই করে দেখার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। ২০১৭-র জুনে সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা দেয় আইএএস রিনা বাবাসাহেব কাঙ্গালের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি। তাতে বলা হয়, অজিত জোগী তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের নন।
আরও পড়ুন: ৬-১২ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় বার টাকা তোলা যাবে না এটিএমে! প্রস্তাব ব্যাঙ্ক বৈঠকে
কিন্তু ওই কমিটির রিপোর্টকে ছত্তীসগঢ় হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানান অজিত জোগী। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ওই কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এত দিন তদন্ত চালিয়ে গত ২১ অগস্ট একটি রিপোর্ট জমা দেয় ওই কমিটি। তাতে বলা হয়, নিজের জনজাতি পরিচয় প্রমাণ করতে পারেননি অজিত জোগী। তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি আইনে অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে। বাজেয়াপ্ত করতে হবে তাঁর ভুয়ো শংসাপত্র। উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত মারওয়াহি আসন থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন জোগী। এ বার সেই বিধায়ক পদও তাঁকে খোয়াতে হতে পারে বলে জল্পনা।
আরও পড়ুন: ঘর, বাইরের সঙ্কটে এ বার পরিত্রাতা হতে পারবে তো আরবিআই?
দীর্ঘ দিন কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অজিত জোগী। কিন্তু ২০১৬-য় কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। নিজে জনতা কংগ্রেস ছত্তীসগঢ় দল গঠন করেন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘সনিয়া গাঁধী ও রাহুল গাঁধী বিশ্বাস করেন আমি জনজাকি। শুধুমাত্র ভূপেশ বাঘেলই তা বিশ্বাস করেন না। তাঁর কথা মতোই কাজ করেছে ওই কমিটি।’’ তাঁর ছেলে অমিত জোগী জানিয়েছেন, তদন্তকারী কমিটির রিপোর্টকে উচ্চ আদালতে গিয়ে চ্যালেঞ্জ জানাবেন তাঁরা।