এখনই খুলছে না দিল্লির কোনও স্কুল। কারণ— সেই বায়ুদূষণ!
এখনই খুলছে না দিল্লির কোনও স্কুল। কারণ— সেই বায়ুদূষণ! এক সপ্তাহ ধরে দিল্লি ও কেন্দ্রীয় সরকার দূষণ নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপ করলেও আজ জানা গিয়েছে, শহরে বায়ুদূষণের মাত্রা সে রকম কমেনি। ফলে আপাতত অনির্দিষ্ট কালের জন্য জাতীয় রাজধানী অঞ্চল (এনসিআর)-এর সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক।
‘সিস্টেম অব এয়ার কোয়ালিটি অ্যান্ড ওয়েদার ফোরকাস্টিং অ্যান্ড রিসার্চ’ জানাচ্ছে, রবিবার সকাল ৯টার সময়ে দিল্লির বাতাসে দূষণ-সূচক ছিল ৩৪৭। দু’দিন আগে, অর্থাৎ শুক্রবার, এই দূষণ-সূচক ছিল ৩৩২। দূষণের মাত্রা ফের বেড়ে যাওয়ায় চিন্তায় পরিবেশবিদেরা। চিন্তায় কেন্দ্রীয় এবং দিল্লি সরকারও।
এই পরিস্থিতিতে আজ কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্দেশ দিয়েছে, পরবর্তী নোটিস জারি না করা পর্যন্ত দিল্লি ও তার সংলগ্ন এলাকায়, অর্থাৎ জাতীয় রাজধানী অঞ্চল সব স্কুলকেই অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যেতে হবে। কোনও ভাবেই অফলাইন ক্লাস চালু করা যাবে না। সব শ্রেণির জন্যই এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘‘কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট (সিএকিউএম) যত ক্ষণ পর্যন্ত নতুন কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি না করছে, তত দিন এনসিআরের সব স্কুল অনলাইন পদ্ধতিতেই চলবে। সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুলকে এই নির্দেশ মেনে চলতে হবে।’’ তবে এই নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে বোর্ড পরীক্ষার্থীদের। সামনেই সিবিএসই এবং আইসিএসই-র দশম শ্রেণির প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা।
১৩ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল ১৫ তারিখ থেকে দিল্লির সব স্কুলের অফলাইন ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরে দিন হরিয়ানার চারটি শহর— গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ, সোনীপত এবং ঝজ্জরেও শুধু অনলাইন স্কুল করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সিএকিউএমের নির্দেশে গত এক সপ্তাহ ধরে নির্মাণকাজ বন্ধ এনসিআরে। বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুলের অফলাইন ক্লাসও। সরকারি কর্মীদের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। অধিকাংশ সংস্থাও কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে। অত্যাবশ্যক নয়, এমন পণ্যের ট্রাক ঢোকা বন্ধই থাকছে দিল্লিতে। কিন্তু এত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও দিল্লির বাতাস এখনও ‘অতি খারাপ’ই।
বৃহস্পতিবার দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই দাবি করেছিলেন, দিল্লির দূষণের ৬৯ শতাংশের জন্য বাইরের নানা উৎস দায়ী, যার অন্যতম ফসলের গোড়া পোড়ানো। তবে সুপ্রিম কোর্ট এই দাবি মানেনি। আগামী কাল ফের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন পরিবেশমন্ত্রী। মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সিএকিউএমের পাশাপাশি দিল্লি সরকারও কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তাতে বাতাসের মান উন্নত না হলে আরও কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। তা নিয়েই কাল পরিবেশমন্ত্রীর নেতৃত্বে আলোচনায় বসা হবে।’’