(বাঁ দিকে) জগন্মোহন রেড্ডি এবং ওয়াইএস শর্মিলা। — ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যেই বড় দায়িত্ব পেলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডির বোন তথা অবিভক্ত অন্ধ্রের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডির কন্যা শর্মিলা। মঙ্গলবার তাঁকে অন্ধ্রপ্রদেশ কংগ্রেসের সভানেত্রী পদে নিয়োগ করেছেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। সোমবারই ইস্তফা দিয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি জি রুদ্ররাজু। তাঁর শর্মিলাকে তাঁর উত্তরসূরি মনোনীত করা হয়েছে বলে এআইসিসির প্রেস বিজ্ঞপ্তি জানাচ্ছে।
কয়েক মাস পরে লোকসভা ভোটের সঙ্গেই অন্ধ্রপ্রদেশে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। কংগ্রেস হাইকমান্ডের এই সিদ্ধান্তের ফলে সেখানে দাদা-বোনের লড়াই দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। প্রসঙ্গত, গত ৪ জানুয়ারি দিল্লিতে রাহুল গান্ধী এবং খড়্গের উপস্থিতিতে ‘হাত’ শিবিরে শামিল হয়েছিলেন শর্মিলা। তাঁর দল ওয়াইএসআর তেলঙ্গানা পার্টিও আনুষ্ঠানিক ভাবে মিশে যায় কংগ্রেসে। মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশ কংগ্রেসের বিদায়ী সভাপতি রুদ্ররাজুকে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির ‘বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য’ করা হয়েছে।
জগনের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে শর্মিলা বছর তিনেক আগে ওয়াইএসআর কংগ্রেস ছেড়ে প্রয়াত বাবার নামে নতুন দল গড়েছিলেন। জগন-শর্মিলার মা বিজয়াম্মাও পরে সেই দলে শামিল হন। শর্মিলা শিবিরের দাবি ছিল, হায়দরাবাদ নিবাসী প্রয়াত রাজশেখর রেড্ডির কন্যা অন্ধ্রপ্রদেশের তুলনায় তেলঙ্গানার স্বার্থরক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিতে চান। তাই নতুন দল গড়েছেন তিনি। তবে শর্মিলাকে নিয়ে তেলঙ্গানা কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের আপত্তি ছিল বলে দলের একটি অংশ জানাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তাই তাঁকে দাদার বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক লড়াই’ লড়তে অন্ধ্রে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন অখণ্ড অন্ধ্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা রাজশেখর রেড্ডি। তাঁর মৃত্যুতে খালি হওয়া কাড়াপা জেলার পুলিভেন্ডুলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জেতেন বিজয়াম্মা। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে ২০১১ সালে নয়া দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস গড়েন রাজশেখর-পুত্র জগন। সে সময় পাশে পেয়েছিলেন মা বিজয়াম্মা এবং বোন শর্মিলাকে। পরে জগনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে দু’জনের।
শর্মিলার ডাকে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যেই ওয়াইএসআর কংগ্রেসের বিদ্রোহী বিধায়ক কে রামচন্দ্র রেড্ডি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। অনন্তপুর জেলার রায়দুর্গের এই বিধায়ক প্রয়াত রাজশেখরের ঘনিষ্ঠ অনুগামী ছিলেন। শর্মিলা-রামচন্দ্রকে অনুসরণ করে রাজশেখর-ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন মন্ত্রী কোন্থালা রামকৃষ্ণ, বিদ্রোহী ওয়াইএসআর কংগ্রেস বিধায়ক অল্লা রামকৃষ্ণ রেড্ডি (অন্ধ্র রাজনীতিতে ‘আরকে’ নামে জনপ্রিয়), তিপ্পালা নাগি রেড্ডির মতো নেতারা কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন বলে দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে।