(বাঁ দিকে) মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদ এবং শ্রীকৃষ্ণ মন্দির। — ফাইল চিত্র।
বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের মতো মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদে ‘সমীক্ষা’র প্রয়োজন নেই বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এ বিষয়ে মুসলিম পক্ষের আবেদনে সায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। হিন্দুত্ববাদীদের আবেদন মেনে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট এক জন কোর্ট কমিশনারের তত্ত্বাবধানে সমীক্ষার যে নির্দেশ দিয়েছিল, মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
মথুরার শাহি ইদগাহকে ‘কৃষ্ণজন্মভূমি’ বলে দাবি করে সেখানে ‘হিন্দুত্বের প্রমাণ’ রয়েছে বলে হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষে আবেদন জানানো হয়েছিল, তার কোনও তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হয়নি বলে বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানিয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘‘হিন্দু পক্ষের দাবিগুলি অস্পষ্ট।’’ তার ভিত্তিতে কোর্ট-কমিশনার নিয়োগ করে সমীক্ষার নির্দেশ অর্থহীন বলেই শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ।
গত ২৯ অগস্ট হিন্দু পক্ষের আবেদন মেনে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদে ভিডিয়ো সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল। বিচারপতি পীযূষ অগ্রবাল সেই সমীক্ষা তত্ত্বাবধানের জন্য এক আইনজীবীকে কোর্ট কমিশনার এবং দু’জনকে সহকারী কোর্ট কমিশনার নিযুক্ত করেছিলেন। আগামী চার মাসের মধ্যে সমীক্ষার রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন তিনি। প্রাথমিক ভাবে উচ্চতর বেঞ্চ তাতে স্থগিতাদেশ দিলেও পরে তাতে ছাড়পত্র দিয়েছিল। এর পরে শুরু হয় জমি মাপা এবং সমীক্ষার কাজ।
গত বছরের অগস্টে শাহি ইদগাহে ‘হিন্দুত্বের নিদর্শনগুলি’ খুঁজে বার করার জন্য জ্ঞানবাপীর মতোই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মুক্তি নির্মাণ ট্রাস্টের তরফে পৃথক আবেদন জানানো হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। সেই আবেদন এখনও বিচারাধীন। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে শাহি ইদগাহ মসজিদ কমিটির আইনজীবী ছিলেন তনসিম আহমদি। হিন্দু পক্ষের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান।
মথুরার প্রাচীন কাটরা স্তূপ (যা কাটরা কেশবদাস নামে পরিচিত) এলাকায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান কমপ্লেক্সের পাশেই রয়েছে শাহি ইদগাহ মসজিদ। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, ইদগাহের ওই জমিতে কৃষ্ণের জন্মস্থানে ছিল প্রাচীন কেশবদাস মন্দির। কাশীর ‘আসল বিশ্বনাথ মন্দিরের’ মতোই মথুরার মন্দিরটিও ধ্বংস করেছিলেন মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব। অভিযোগ, অওরঙ্গজেবের নির্দেশে ১৬৬৯ থেকে ১৬৭০ সালে তৈরি করা হয়েছিল মসজিদটি। কাটরা কেশবদাস মন্দিরের ১৩.৩৭ একর জমিতে। সেই জমির মালিকানা নিয়ে বিবাদের জেরেই সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট।