ছবি: সংগৃহীত
নরেন্দ্র মোদী সরকারের তিন কৃষি আইন বাতিল ও ফসলের ন্যূনতম দাম নিশ্চিত করার জন্য আইন প্রণয়নের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলন সাত মাস পেরিয়েও একই রকম ভাবে চলছে। এই অবস্থায় আন্দোলনের সাত মাস পূর্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারের রক্তচাপ বাড়িয়ে বড় ধরনের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে আন্দোলনকারী কৃষকদের সংযুক্ত মোর্চা। শনিবার মিছিল করে দিল্লি অভিযানের কথা কৃষকেরা ঘোষণা করতেই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে রাজধানী। শুক্রবার রাতেই দিল্লির তিনটি মেট্রো স্টেশন সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। রাতে উপরাজ্যপালের সঙ্গে কৃষক নেতাদের বৈঠকের পরে ঠিক হয়েছে, আপাতত দিল্লিতে কোনও মিছিল করবেন না কৃষকেরা।
তবে তাতে আন্দোলনে রাশ টানা হচ্ছে না। তিন কৃষি আইন বাতিল ও জরুরি অবস্থার ৪৬তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘খেতি বাঁচাও, লোকতন্ত্র বাঁচাও’ দিবসের ডাক দিয়ে সারা দেশের আন্দোলনকারী কৃষকদের কাছে সংযুক্ত কিষান মোর্চার তরফে আবেদন জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির রাজভবনে কৃষকেরা যাতে রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করে লেখা স্মারকলিপি জমা দেন। সেই উদ্দেশ্যে এ দিন পঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষকেরা মিছিল করে রাজভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করতেই তাদের পথ আটকাতে সক্রিয় হয় পুলিশ। চণ্ডীগড়-মোহালি সীমানায় হরিয়ানার রাজভবনের উদ্দেশে কৃষকদের মিছিল থামাতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। অন্য দিকে কৃষকদের একটি বড় মিছিল পঞ্জাবের রাজভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করলেও রাজভবনের পথে কতাদের পথ আটকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে চণ্ডীগড়-পঞ্চকুলা সীমানাতেও। দিল্লি পুলিশ পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ সীমানায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে। বহু জায়গাতেই কৃষকেরা পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন। তৃষক নেতারা প্রশাসনের এই আচরণকে ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’ বলে এর তীব্র নিন্দাও করেছেন। মধ্যেই রটে যায় ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন (বিকেইউ) নেতা রাকেশ টিকায়েতকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। এই খবর নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তেই পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, খবরটি ভুয়ো। এবং ভুয়ো খবর ছড়ানোর পিছনে যারা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে এ দিন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী টুইটারে বলেন, ‘‘সিধি সিধি বাত হ্যায়, হাম সত্যাগ্রহী অন্নদাতাকে সাথ হ্যায়’। দিল্লিতে সিপিএমের কৃষক সংগঠন সারা ভারত কৃষক সভার নেতা হান্নান মোল্লা, বিজু কৃষ্ণন, অশোক ধাওয়ালের নেতৃত্বে আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে অন্য সংগঠনগুলির সঙ্গে যৌথ ভাবে কালো পতাকা প্রদর্শন এবং মোদী সরকারের কুশপুতুল পোড়ান বাম নেতারা।