কর্নাটক জিতে বিজেপি বিরোধী শিবিরে আরও মজবুত হল রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব। ছবি: পিটিআই।
কর্নাটক ভোট ‘কোয়ার্টার ফাইনাল’! ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে ‘সেমিফাইনাল’ হতে পারে দেশের ৫টি রাজ্যের বিধানসভা ভোট। দক্ষিণ ভারত ‘বিজেপিমুক্ত’ করার পরে এ বার ওই ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটকেই ‘পাখির চোখ’ করতে চাইছে কংগ্রেস।
চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে ওই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। এর মধ্যে রাজস্থান এবং ছত্তীসগঢ়ে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। অন্য তিন রাজ্য— মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং মিজোরামে তারাই প্রধান বিরোধী দল। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কর্নাটকে বিপুল জয়ের পরে বিজেপি বিরোধী শিবিরের ‘নেতৃত্বের’ প্রশ্নে কংগ্রেসের অবস্থান জোরালো হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে জয়ের ধারা অক্ষুন্ন রেখে সেই অবস্থান আরও নিরঙ্কুশ করতে চান রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গেরা। সেই লড়াই সফল হলে লোকসভা ভোটের ‘বিজেপি বিরোধী মুখ’ হিসেবে রাহুলের অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা যথেষ্টই।
২০১৮ সালের নির্বাচনে ওই ৫টি রাজ্যের মধ্যে ৩টিতে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডের নেতৃত্বে প্রায় দু’ডজন কংগ্রেস বিধায়কের দলবদলের জেরে কমলনাথের সরকারের পতন ঘটে। সম্প্রতি সে রাজ্যে কর্নাটকের মতোই দলবদলের ‘উলটপুরাণ’ শুরু হয়েছে। বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বেশ কিছু নেতা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কৈলাস জোশীর ছেলে তথা বিজেপি বিধায়ক দীপক। প্রায় দু’দশকের ‘প্রতিষ্ঠান বিরোধী’ হাওয়ার মোকাবিলা করে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের পক্ষে সহজ হবে না বলেই ভোট পণ্ডিতদের একাংশ মনে করছেন।
ছত্তীসগঢ় এবং রাজস্থানে ২০১৮ সালে বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস। দু’রাজ্যেই এ বারও মূল লড়াই ‘পদ্ম বনাম হাত’! তবে কর্নাটকের মতোই ৫ বছর অন্তর সরকার পরিবর্তনের ধারা রয়েছে রাজস্থানে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের সঙ্গে সচিন পাইলটের ধারাবাহিক লড়াইও কংগ্রেসকে দুর্বল করেছে বলে দলের অন্দরের খবর। তবে ভূপেশ বঘেলের ছত্তীসগঢ়ে ক্ষমতা ধরে রাখার বিষয়ে কংগ্রেস আত্মবিশ্বাসী।
২০১৮ সালে ত্রিমুখী লড়াইয়ে তেলঙ্গানায় জয়ী হয়েছিল কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের টিআরএস (বর্তমানে বিআরএস)। এ বারও সেখানে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা। পড়শি রাজ্য কর্নাটকে বিপুল জয় তেলঙ্গানার কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের বাড়তি উদ্দীপনা জোগাবে বলেই মনে করছে দল। উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজোরামের নির্বাচনী ফলের তেমন প্রভাব সর্বভারতীয় রাজনীতিতে পড়ার সম্ভবনা নেই। সে রাজ্যের ভোটের লড়াইয়ে সরাসরি নেই বিজেপিও। তাদের সহযোগী দল ক্ষমতাসীম মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের সঙ্গে মূল লড়াই হবে কংগ্রেসের।