Amit Shah & CAA

পাঁচ রাজ্যের ভোট মিটলেই সিএএ রুল তৈরি করবে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক? জল্পনা পদ্মশিবিরের অন্দরে

২০১৯ সালের মোদী দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর সংসদের দু’কক্ষে পাশ হয়েছিল নাগরিক সংশোধনী বিল (সিএবি)। তার পর চার বছর হয়ে গেলেও সেই বিষয়ে ‘রুল’ তৈরি করা হয়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:৪৩
Share:

অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট মিটে গেলেই নাগরিক সংশোধনী আইনের (সিএএ) রুল তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে উদ্বাস্তুদের ভোট নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ করতে পারে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ক্ষমতায় আসতে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল বিজেপি। ২০১৯ সালে মোদী দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর সংসদের দু’কক্ষে পাশ হয়েছিল নাগরিক সংশোধনী বিল (সিএবি)। তার পর চার বছর হয়ে গেলেও সেই বিষয়ে রুল তৈরি করা হয়নি।

Advertisement

কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে উদ্বাস্তু সমাজের ভোট আবারও এক বাক্সে আনতে সিএএ কার্যকর করার পক্ষপাতী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তাই রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় তেলঙ্গানা এবং মিজ়োরামের বিধানসভা নির্বাচন পর্ব মিটে গেলে এই কাজে হাত দিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। সিএএ-র রুল তৈরির দায়িত্বে রয়েছে শাহের মন্ত্রক। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে সপ্তম বারের জন্য সংসদীয় সচিবালয়ের কাছে রুল তৈরির সময় চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। চার বছর ধরে বিষয়টি ঝুলে থাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে উদ্বাস্তু সমাজের একাংশের মধ্যে। পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়ের বড় অংশও ইতিমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সিএএ-র রুল তৈরি না হওয়ায়। বনগাঁর ঠাকুরবাড়ি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও বিষয়টি নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের কবিয়াল বিধায়ক অসীম সরকার আবার প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘‘নাগরিক সংশোধনী আইনের রুল তৈরি না হলে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে ভোট চাইতে পারব না।’’ এমন সব খবর রাজ্য নেতৃত্ব মারফত পৌঁছেছে শাহের দফতরে। সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির এক নেতা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি এ বছরের শেষের দিকে রুল তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন বলেই সূত্রের খবর।

তাই লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য বিজেপির কাছে মতুয়া ভোট নিশ্চিত করার বড় হাতিয়ার হতেই পারে সিএএ। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে সিএবি সংসদে পাশ করিয়েছিল মোদী সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা (হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, পার্সি, খ্রিস্টান) যদি ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় নিতে চান, সে ক্ষেত্রে তাঁদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত। কেন ওই তালিকায় মুসলিম সমাজের নাম নেই, তা নিয়ে পথে নামে সংখ্যালঘু সমাজ এবং বিরোধী দলগুলি। বিরোধীদের অভিযোগকে পাত্তা না দিয়েই বিল পাশ করিয়েছে কেন্দ্র। এত দিন বিষয়টি ঠান্ডা ঘরে থাকলেও, চার রাজ্যের ভোটপর্ব মিটে গেলেই রুল তৈরি করে লোকসভা ভোটের আগে উদ্বাস্তু ভোট নিশ্চিত করতে চায় বিজেপি।

Advertisement

তবে আইন পাশের সময় রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষোভ বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু তাতে সংসদে বিল পাশ আটকানো যায়নি। এ বার রুল তৈরির ক্ষেত্রে বাংলায় আবারও নতুন করে কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটে কি না, সে দিকেই নজর থাকবে জাতীয় রাজনীতির কারবারিদের। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ নিয়ে তাঁর বিরোধিতার কথা প্রকাশ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছেন। তাই সিএএ রুল তৈরি হলে বিজেপির সঙ্গে তাঁর সংঘাত অনিবার্য বলেই মনে করছেন জাতীয় রাজনীতির কারবারিরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement